ভুয়ো টিকাকাণ্ড আর তার জেরে গ্রেফতার হওয়া দেবাঞ্জন দেবকে ঘিরে এখন বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কার্যত এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস আর বিরোধী বিজেপি নিত্যদিনই একে অপরের দিকে আঙুল তুলে চলেছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, দেবাঞ্জন তৃণমূলের নেতা এবং তাঁর যাবতীয় কীর্তিকলাপ নিয়ে সম্যক ওয়াকিবহাল ছিলেন রাজ্যের শাসক দলের সব নেতারাই। মায় সরকারি কর্মচারী থেকে আমলারাও। এখন তাঁরা নিজেদের বাঁচাতে দেবাঞ্জনের যাবতীয় কীর্তির দায় নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে চাইছেন। যদিও দিলীপের এই দাবির স্বপক্ষে তিনি কোনও প্রমাণ তুলে ধরতে পারেননি। আবার দিলীপের এই বক্তব্যের জেরেই তাঁকে একজাত নিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি আবার দাবি করেছেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি কার্যত কাঁচের ঘরে বসে ঢিল মারছেন।


দিলীপ ঘোষকে খুব একটা টুইট করতে দেখা যায় না। কিন্তু এদিন তিনি টুইট করেছেন। আর সেখানেই সরব হয়েছেন দেবাঞ্জনকে নিয়ে। তিনি লিখেছেন, 'দেবাঞ্জন দেব দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের তথ্য প্রযুক্তি সেলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন বলে খবর পেয়েছি। সংগঠন থেকে সরকার সব জায়গায় জড়িত ছিলেন তিনি। সর্বোচ্চ নেতারা জানতেন। তাঁরা জানতেন বলেই এতদিন তিনি এসব করতে পেরেছেন। শুধু দেবাঞ্জন নন, আরও অনেকে আছেন যাঁরা গাড়ি, নীলবাতি, ভুয়ো সরকারি লোগো ইত্যাদি ব্যবহার করেন। ভুয়ো অফিসাররা বিধানসভা নির্বাচনকেও প্রভাবিত করেছেন কিনা সেই বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে।' দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

তবে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পালটা সরব হয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, 'আজগুবি অভিযোগ করছেন দিলীপ ঘোষ। এই ধরনের কোনও ব্যক্তি দলে ছিল বলে জানা নেই। সবার আগে দিলীপ ঘোষ এই প্রশ্নের জবাব দিন, নারদা কাণ্ডে যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে , যাঁর সহায়কের বিরুদ্ধে ত্রিপল চুরির অভিযোগ রয়েছে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে কীভাবে বিরোধী দলনেতা করা হল! এই সব বড় বড় কথা দিলীপ ঘোষের গলায় মানায় না।' প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। সেই সময় একটি ছবিকে সামনে রেখে রাজ্যপালকে নিশানা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদ। তাঁর দাবি, কসবা ভুয়ো টিকাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের নিরাপত্তারক্ষী অরবিন্দ বৈদ্যের সঙ্গে একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। ওই নিরাপত্তা রক্ষীর মাধ্যমে অনেকের কাছে খাম যেত। যদি দেখা যায় এই নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে ধনখড়ের কোনও সম্পর্ক রয়েছে তাহলে তা ভয়ানক। প্রতারকের নিরাপত্তারক্ষী রাজ্যপালের বৃত্তে গেল কী করে, সেই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তিনি বলেছেন তদন্ত করে সত্যটা সামনে আনার প্রয়োজন রয়েছে। মনে করা হচ্ছে সুখেন্দু শেখরের সেই দাবিকেই কার্যত ঘেঁটে দিতে দিলীপ এদিন দেবাঞ্জনকে তৃণমূলের নেতা হিসাবে চালিয়ে দিয়েছেন।
Dailyhunt
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours