ফোনে কন্যাশ্রীর টাকা ঢোকার মেসেজ। সেই মেসেজ পেয়েই ফোনাফোনি পাঁচ ছাত্রীর। ঘন্টা খানেকের সেই আলোচনায় তাঁদের সিদ্ধান্ত, অন্যান্য দাদা-দিদির মতো এবার তাঁরাও করোনা  আক্রান্তদের জন্য কিছু করবেন।

তাই রাজ্য সরকারে দেওয়া কন্যাশ্রীর টাকা নিজেদের কাজে ব্যবহার না করে করোনা আক্রান্তদের সাহায্যের জন্য দান করলেন জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ৫ ছাত্রী।

শুক্রবার রাতে একটি আড়ম্বরহীন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ৫ ছাত্রী অঙ্কনা ঘোষ,অন্বেষা সিংহ, অহনা সোম, মঞ্জিষ্ঠা রায় ও রূপসা সাহা তাদের কন্যাশ্রী প্রকল্পে পাওয়া বাত্‍সরিক এক হাজার করে মোট পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন স্টুডেন্টস হেলথ হোম নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে।

রূপসা সাহার কথায়, বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কন্যাশ্রীর টাকা ঢোকার পর বন্ধুদের ফোন করেন তিনি। জানতে চান এবারের কন্যাশ্রীর টাকা নিয়ে তাঁরা কী করবেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অন্যান্য অনেকের মতো এই অতিমারি পরিস্থিতিতে তাঁরাও মানুষের জন্য কিছু করবেন। এই অভাব-আতঙ্কের সময় তাঁরাও দাঁড়াবেন অসহায় মানুষের পাশে। সেই ভেবেই নিজেদের কন্যাশ্রীর টাকা তঁরা দান করেছেন।

আর রূপসার মা রিতা সাহার কথায়, “ছোট বেলায় চাইতাম মেয়ে বড়ো হোক। এখন বড় হয়েছে। তাই চাই, মেয়ে মানুষের মতো মানুষ হোক। গতকাল টাকা পাওয়ার পর ওরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেয় কন্যাশ্রীর টাকা অন্যকিছুতে খরচ না করে এইভাবে হেলথ হোমকে দান করবে। আমি সায় দিই। কন্যাশ্রীর টাকা হয়ত অনেক স্বচ্ছল পরিবারের মেয়েদের কাজে লাগে না। টাকা ব্যাঙ্কেই জমে থাকে। তাই এই সময়ে তারাও যদি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে তো খুব ভালো হয়।”

হেলথ হোমের সম্পাদক ডাক্তার পান্থ দাশগুপ্ত বলেন, “এই করোনাকালে প্রচুর মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। যার মধ্যে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীরা রয়েছে। প্রাক্তনীরা বড় হয়েছে। তাদের নিজেদের বিচার বুদ্ধি রয়েছে। কিন্তু স্কুল পড়ুয়ারা আজ যা করল তাতে আমরা অভিভূত। এদের দেখাদেখি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনেকেই এখন এগিয়ে আসবে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours