দিঘা উপকূলেই আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় যশ। রবিবার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে। বুধবার বিকেলে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে তা আছড়ে পড়তে পারে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্যজীবীদের রবিবার সন্ধ্যার মধ্যেই উপকূলে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আগামী ২২ মে শনিবার ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আন্দামানের কাছে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে রবিবার এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ক্রমশ এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। প্রথমে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অভিমুখ থাকলেও পরে অভিমুখ পরিবর্তন হতে পারে। আবহাওয়াবিদদের অনুমান, বাংলা-ওড়িশা উপকূল এলাকাতেই আছড়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা ঘূর্ণিঝড়ের। সেক্ষেত্রে বাংলার দিঘা-শঙ্করপুর উপকূল থেকে ওড়িশার বালাসোর উপকূলের মাঝে এটি স্থলভাগের প্রবেশ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সুন্দরবনের বাংলাদেশ উপকূল থেকে ওড়িশা উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত



গুজরাতের চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় টাউটের পর যে ঘূর্ণিঝড় হবে তা আবহাওয়া দফতরের নিয়ম অনুযায়ী ওমানের দেওয়া নাম "যশ"(Yaas)। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টির নাম যশ হতে চলেছে। ঘূর্ণিঝড় টাউটে ইতিমধ্যেই শক্তি হারিয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপের মধ্যপ্রদেশে অবস্থান করছে। এটি ক্রমশ নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে সরে যাবে। এর প্রভাবে আজ এবং আগামিকাল, শুক্রবার মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হবে। আগামিকাল, শুক্রবার থেকেই আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ, বাংলা-ওড়িশা উপকূলে মৎস্যজীবীদের রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৪ মে সোমবার থেকে সমুদ্রে যেতে  নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। মঙ্গলবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের তিন জেলা, উত্তর ২৪ পরগনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে বৃষ্টি শুরু হবে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উপকূলের তিনি জেলা ছাড়াও কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পশ্চিম বর্ধমানে। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

এই ঘূর্ণিঝড় কতটা তাণ্ডবলীলা চালাবে তা রবিবার নিম্নচাপ তৈরির পরেই বিস্তারিত জানা যাবে। তবে এই সিস্টেমের প্রভাবে দেশে বর্ষা যথাসময়ে চলে আসবে। ভারতবর্ষের মূল ভূখণ্ড কেরলে প্রথম বর্ষা আসে পয়লা জুন। প্রথমে আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় টাউটে ও পরে বঙ্গোপসাগরে আরও একটি সিস্টেম তৈরি হওয়ায় আবহাওয়াবিদদের অনুমান, কেরলে দু-এক দিন আগেই বর্ষা ঢুকে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ৩১ মে-র মধ্যে কেরলে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

#Cyclone_Yash

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours