রোজভ্যালি কাণ্ডে এ বার সিবিআই গ্রেফতার করল শুভ্রা কুন্ডুকে। তিনি রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুন্ডুর স্ত্রী। শুক্রবার বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে। তার আগে তাঁকে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। সেখানে শুভ্রা বহু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। ইচ্ছাকৃত ভাবে অনেক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়েও যান বলে গোয়েন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই শুভ্রাকে ভুবনেশ্বরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হবে।
ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুন্ডুকে আগেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। ২০১৫ সাল থেকে জেলে তিনি। এই মামলায় শুভ্রা মুখ খুললে আরও অনেক প্রভাবশালীর নাম বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, গৌতম জেলে যাওয়ার পর রোজ ভ্যালির ‘চাবির গোছা’ শুভ্রার হাতে ওঠে। এমনকি যে ‘অদ্রিজা’ দোকানের আড়ালে কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ, তারও দেখভাল করতেন শুভ্রা। এমনকি সেই সময় তদন্তের দায়িত্বে থাকা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর এক কর্তা মনোজ কুমারের সঙ্গেও শুভ্রার নাম জড়িয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে, শুভ্রার কাছ ‘সুবিধা’র বিনিময়ে তদন্তকে ভুল পথে চালনা করছিলেন তিনি। সেই সময় মনোজকেও গ্রেফতারও করে কলকাতা পুলিশ।কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অভিযোগ, রোজ ভ্যালির কোটি কোটি টাকা পাচার করে দেন শুভ্রা। তাঁর বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণও রয়েছে। কিন্তু গোয়েন্দাদের সামনে কিছুতেই মুখ খুলছিলেন না তিনি। অনেক প্রশ্নের উত্তরই এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। এমনকি তদন্তে অসহযোগিতাও করছিলেন বলে অভিযোগ। তাই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। এমনটাই গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, গ্রেফতার হওয়ার পর জেল থেকে যাঁদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন গৌতম, তাঁদের মধ্যে অন্যতম শুভ্রা। কী করা উচিত আর কী নয়, কাকে সংস্থার কোন পদে রাখা উচিত, কাকে কোথায় সরানো উচিত, ফোনে এ নিয়ে তাঁকে পরামর্শ দিতেন গৌতম।টাকাপয়সা কোথায় সরিয়ে ফেলতে হবে তা-ও শুভ্রাকে ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
গোয়েন্দাদের সন্দেহ, গৌতমের নির্দেশেই কাউকে কিছু না-জানিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা সরিয়ে ফেলেন শুভ্রা। বিদেশেও টাকা সরিয়ে ফেলা হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দাদের। হেফাজতে চেপে ধরলেই শুভ্রা সব কিছু উগরে দিতে পারেন বলে আশাবাদী তাঁরা। যে টাকার হদিশ মিলছে না, তার খোঁজে জায়গায় জায়গায় তল্লাশি অভিযানও চালানো হতে পারে।
রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ। ইডি এবং সিবিআই, দুই সংস্থাই তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। গৌতমের পাশাপাশি এই মামলায় তৃণমূলের দুই সাংসদ তাপস পাল এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করা হয়। তবে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র মদতেই নতুন করে তদন্তের নামে ধরপাকড় শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করছে জোড়াফুল শিবির। 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours