অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, প্রয়াত প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তরুণ গগৈকে তাঁর 'গুরু' হিসেবে উল্লেখ করলেন রাহুল গান্ধী। বুধবার গুয়াহাটিতে অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে, তাঁকে 'গুরু'র আসনে বসান সোনিয়া-পুত্র। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, 'তরুণ গগৈয়ের মৃত্যু আমার জন্য ব্যক্তিগত ক্ষতি।'
গোয়া থেকে বিশেষ ফ্লাইটে বুধবার বেলায় গুয়াহাটি পৌঁছন কংগ্রেস নেতা। বিমান থেকে নেমে সোজা চলে যান শ্রীমন্ত শংকরদেবা কলাক্ষেত্রে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে এখানেই প্রবীণ কংগ্রেস নেতার মরদেহ সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা রয়েছে। বুধবার গোটা দিন কলাক্ষেত্রেই মরদেহ শায়িত থাকবে। ২৬ নভেম্বর, বুধবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তার আগে অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মরদেহ তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী ঘোরানো হবে মন্দির, মসজিদ ও গির্জায়।

কলাক্ষেত্রে পৌঁছে রাহুল প্রয়াত নেতার মরদেহে ফুলের তোড়া দিয়ে শেষশ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তরুণ গগৈয়ের পুত্র, সাংসদ গৌরব গগৈ সেসময় রাহুলের পাশে ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে রাহুল গান্ধী বলেন, 'গগৈজি শুধুমাত্র অসমের একজন নেতা ছিলেন বলে আমি মনে করি না। তিনি ছিলেন দুর্দান্ত মুখ্যমন্ত্রী ও একজন জাতীয় নেতা।' সোনিয়াপুত্র আরও বলেন, 'উনি (তরুণ গগৈ) অসমের মানুষজনকে একসূত্রে বেঁধে রেখে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। অসমে শান্তি এনেছিলেন।'

রাহুল মনে করেন, অসমের পাশাপাশি দেশের জন্য তরুণ গগৈ যে অবদান রেখে গিয়েছেন, তা ভোলার নয়। পুরনো স্মৃতিচারণ করে কংগ্রেস নেতা বলেন, 'তরুণ গগৈয়ের সঙ্গে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েছি। উনি ছিলেন আমার কাছে একজন শিক্ষক। আমার গুরু। অসম কী, অসমের মানুষজন কেমন, সে সম্পর্কে উনি আমাকে বুঝিয়েছেন। অসমের সৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন আমার কাছে।' রাহুল মনে করেন, তরুণ গগৈ ছাড়া অসমকে জানা তাঁর অসম্পূর্ণ থেকে যেত। তাই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার মৃত্যু তাঁর কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি।

করোনাকে পরাস্ত করলেও শেষ পর্যন্ত কোভিড-পরবর্তী অসুস্থতার কাছে হার মানতে হয় অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। সোমবার সন্ধ্যায় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার জীবনাবসান হয়। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর দীর্ঘ দু-মাস ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মাঝখানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার দিন কয়েকের মধ্যেই ফের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে পুনরায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গত শনিবার সকাল থেকেই দ্রুত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যায়। সবরকম চেষ্টা করেও চিকিত্‍‌সকেরা তাঁকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেননি।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours