ফের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগ। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগীর পরিবারের রোষের মুখে জুনিয়র ডাক্তার। ঘটনা এনআরএস হাসপাতালের। শুধু চিকিৎসকই নয়, হাসপাতালের নার্স-সহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসা কর্মীকেও মারধর করার অভিযোগ রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে এনআরএস হাসপাতালে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। রক্ত আমাশা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। ওইদিন বিকেলের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে রক্ত আমাশা বন্ধ করার জন্য ইনজেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকেরা ইনজেকশন দেওয়ার কিছু পরেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। তার জেরেই রোগীর পরিবারের লোকেরা অভিযোগ করেন, চিকিৎসকের গাফিলতির জেরেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তারপরই কর্তব্যরত জুনিয়র ডাক্তারকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। চলতে থাকে কিল-চড়-ঘুষি। ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করতে গেলে নার্স ও চিকিৎসাকর্মীরাও হেনস্থার শিকার হন।

এই ঘটনার পরেই এন্টালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। চিকিৎসককে মারধর, কাজে বাধা দানের অভিযোগে মামলা রুজু করে চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা রুজু হয় কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর ও হাসপাতালে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার নির্দিষ্ট ধারায়। বুধবার ধৃতদের শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক দু'দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

বছর খানেক আগে এই হাসপাতালেই চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে জুনিয়র ডাক্তারদের বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতি থেকে শুরু করে নজিরবিহীন বিক্ষোভ চলে। কার্যত থমকে পরিষেবা। একজোট হয়ে আন্দোলনে নামে চিকিৎসকরা। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি চিকিৎসক নিগ্রহ আইন সংশোধন করে রাজ্য সরকার। কিন্তু তারপরেও চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা এতটুকুও যে কমেনি এই ঘটনা তারই প্রমাণ।

করোনাকালে চিকিৎসকরা যেখানে ত্রাতার ভূমিকায় নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছেন। তারমধ্যে এক রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসকদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে নিগ্রহ করার ঘটনাকে নিন্দার চোখে দেখছেন শহরের বিশিষ্টজনেরা।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours