বাস্তব হলিউডের সিনেমা নয়, বরং আরও অনেক বেশি নির্মম। এক কথায় বললে, এত সহজে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না
#কলকাতা:করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আবার আগের জায়গায় ফিরে যাব। রাজনীতির ব্যাপারীরা এই বাক্যকেই আপ্তবাক্য মেনে দিন গুণছেন। আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। কিন্তু এই স্বপ্নে কার্যত জল ঢেলে দিচ্ছেন বহু বিজ্ঞানীই। তাঁদের বক্তব্য, বাস্তব হলিউডের সিনেমা নয় ৷ বরং আরও অনেক বেশি নির্মম। এক কথায় বললে, এত সহজে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।
কিন্তু কোন যুক্তিতে এমন কথা বলছেন তাঁরা? শোনা যাক। হার্ভার্ডের টিএইচ চান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ ইয়োনটান গ্রাড বলছেন, "আমার মত যদি শোনেন, বলব ভ্যাকসিন মানে যদি সুইচ অফ বাটন মনে করেন, তবে তিনি মস্ত ভুল করবেন। এমনকী, করোনা পূর্ববর্তী যুগে ফেরত যাওয়ার গেটওয়ে ভাবলেও ভুল হবে।" আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে একই মর্মে বার্তা দিচ্ছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট অ্যাঞ্জেলা রামমুসেনও।
তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, এবছরের শেষে বা সামনের বছরের শুরুতে ভ্যাকসিন যদি এসেও যায়, তবে তা যুদ্ধশেষের ইঙ্গিত নয়। বরং এক নতুন যুদ্ধের শুরু। কারণ বিশ্বজুড়ে চাহিদা-জোগান, আন্তর্জাতিক সংহতি এই সবই নতুন করে পরীক্ষার মুখে পড়বে। এবং গোটা বিশ্বকে একটা নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যেতে দীর্ঘ সময়ও লাগবে।
কিন্তু একবার শট নিলেই তো মুক্তি? এই প্রশ্নের উত্তরেও সরাসরি না বলছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের যুক্তি, একটি ভ্যাকসিন শরীরে প্রবেশ করলে, তা ইমিউন সিস্টেমকে নতুন করে গঠিত করতে অনেকটা সময় নেয়। এবং অনেক ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেই একাধিকবার শট নিতে হতে পারে।
এমনকী, সবচেয়ে খারাপ সময়ের কথাও ভেবে রাখতে বলছেন গবেষকরা। তাঁদের কথায় তাড়াহুড়ো করে প্রথমে বাজারে আনা ভ্যাকসিন মানবজাতির স্বপ্নভঙ্গেরও কারণ হতে পারে।
আসলে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিয়ে প্রতিযোগিতাটাকেই বাঁকা চোখে দেখছেন তাঁরা। প্রথম হওয়ার তাগিদটাকে তাঁরা প্রশ্নের মুখে ফেলছেন। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ওষুধ গবেষক মাইকেল ক্নিচ বিষয়টিকে তুলনা করছেন এইচআইভির ওষুধ আবিষ্কারের প্রথম দশকের হিড়িকের সঙ্গে। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন এই হিড়‌িকের মধ্যে বেশির ভাগ মধ্যমানের ওষুধ বাজারে এসেছিল। তাই কোন জাতি, কোন দেশ, কোন সংস্থা আগে ভ্যাকসিন আনছে সেটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয় এই বিজ্ঞানীদের কাছে। তাঁরা চান, বৃহত্তর স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া হোক এই বিষয়ে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours