যাদের ৩০-৪০ বছর আগে জন্ম, তাদের সময় ডিজিটাল সার্টিফিকেট থাকত না। সেই সময় পুরসভা বা হাসপাতালের তরফে হাতে লেখা জন্ম শংসাপত্র দেওয়া হত। তবে কেউ চাইলে এই সার্টিফিকেটকে ডিজিটাল সার্টিফিকেট করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে।
শুরু হয়ে গিয়েছে এসআইআর। পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২ রাজ্যে ভোটার তালিকায় নিবিড় পরিমার্জন শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি ভোটারদের তথ্য যাচাই করতে আসবেন বিএলও। যাদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, তাদের কোনও সমস্যা নেই। যাদের নাম এই তালিকায় নেই, তাদের নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দিতে হবে, পূরণ করতে হবে এনুমারেশন ফর্ম। দেখাতে হবে ১২টি প্রয়োজনীয় নথির মধ্যে কোনও একটি দেখাতে হবে। এর মধ্যে প্রথমেই যে তথ্য়টিকে প্রাধান্য় দেওয়া হয়েছে বা নির্বাচন কমিশন যে তথ্যটি দেখতে চাইছে, তা হল বার্থ সার্টিফিকেট বা জন্ম প্রমাণপত্র। এবার অনেকেই চিন্তায় পড়েছেন যে তাদের কাছে তো জন্ম প্রমাণপত্র নেই! তাহলে তারা কী করবেন? নতুন জন্ম সার্টিফিকেট কীভাবে তৈরি করবেন? যাদের কাছে পুরনো হাতে লেখা সার্টিফিকেট আছে, তারাই বা কী করবেন?
ভারতের আইন ও সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের নিয়ম অনুযায়ী, দেশের সকল নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন বা নথিভুক্তকরণ করা বাধ্যতামূলক। শহরে পুরসভার অফিস বা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন গিয়ে বার্থ সার্টিফিকেট তৈরি করা যায়। গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে মহকুমা শাসকের অফিস বা গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে উপযুক্ত নথি দিলেই বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। হাসপাতাল থেকেই বার্থ সার্টিফিকেটের রেজিস্ট্রেশন ফর্ম দেওয়া হয়। এছাড়া সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট- crsorgi.gov.in থেকেও রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পাওয়া যায়।
কীভাবে বার্থ সার্টিফিকেট বের করবেন?
সদ্যোজাতের বার্থ সার্টিফিকেট বা জন্ম শংসাপত্র বের করার জন্য জন্মের ২১ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করতে হয়। এই ফর্মে সন্তানের জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, মা-বাবার পরিচয় ও হাসপাতালের তথ্য উল্লেখ থাকবে।
এই ফর্ম জমা দিলে রেজিস্টার রেকর্ড যাচাই করে। ৭ দিনের মধ্যে বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
যদি হাসপাতালে জন্ম না হয়, তাহলে কী করবেন?
হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে জন্ম হলে মেডিক্যাল অফিসারের দেওয়া জন্মপত্রের নথি লাগে। যদি বাড়িতে কারোর জন্ম হয়, তাহলে কোনও এমবিবিএস চিকিৎসক বা গ্রাম পঞ্চায়েত কিংবা কাউন্সিলরের কাছ থেকে শিশুর নাম, জন্ম তারিখ, বাবার নাম, ঠিকানা, স্বাক্ষর নিয়ে জমা দিলে পুরসভা বা মহকুমা শাসকের অফিস থেকে বার্থ সার্টিফিকেট তৈরি করে দেওয়া হয়। যদি এক বছর পর কেউ জন্ম রেজিস্ট্রেশন করতে চান, তাহলে জেলাশাসক স্তরের সরকারি আধিকারিককে দিয়ে জন্মের তথ্য যাচাই করে নিতে হবে।
কী কী নথি লাগে?
মা-বাবার পরিচয়পত্র (আধার কার্ড, ভোটার কার্ড বা অন্য কোনও সরকারি পরিচয়পত্র
বিবাহের শংসাপত্র (বিবাহিত হলে)
ঠিকানার প্রমাণ
হলফনামা
বার্থ সার্টিফিকেটের ডিজিটাল কপি-
যাদের ৩০-৪০ বছর আগে জন্ম, তাদের সময় ডিজিটাল সার্টিফিকেট থাকত না। সেই সময় পুরসভা বা হাসপাতালের তরফে হাতে লেখা জন্ম শংসাপত্র দেওয়া হত। তবে কেউ চাইলে এই সার্টিফিকেটকে ডিজিটাল সার্টিফিকেট করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে।
যাদের জন্ম ১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসের পর হয়েছে বা সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে পঞ্চায়েত বা পৌরসভা থেকে, তা ডিজিটাইজ করা সম্ভব। ১৯৮৭ সালের আগে যাদের জন্ম, তাদের বার্থ সার্টিফিকেট ডিজিটাইজ করতে সমস্যা হতে পারে।
এর জন্য আসল জন্ম শংসাপত্র ও মা-বাবার পরিচয়পত্র নিয়ে পুরসভা বা পঞ্চায়েত অফিসে কিংবা রেজিস্টার অফিসে গিয়ে ফর্ম এ (Form A) পূরণ করতে হয়।
যদি কারোর আসল বার্থ সার্টিফিকেট হারিয়ে যায়, তাহলে বার্থ সার্টিফিকেটের ফোটোকপি বা পোলিও কার্ড যাতে রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকে, তা দিয়েও ডিজিটাল কপি বের করা যায়। তবে তার আগে পুলিশে ডায়েরি করতে হবে।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours