এসআইআর হল ভারতের ইলেকশন কমিশনের ভোটার ভেরিফিকেশন ড্রাইভ। অর্থাৎ, দেশের বৈধ ভোটারদের যাচাই করা। তারপর ভোটার তালিকা আপডেট ও সংশোধন করা হয়। ভোটার তালিকায় বিরাট কোনও গরমিল মনে হলে এই নিবিড় সংশোধন করা হয়।
SIR-এর পর ভোটার তালিকা থেকে আপনার নাম বাদ গেলে কী হবে?
এসআইআর বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বলছে ভোটার তালিকার। প্রথম দফায় বিহারে হয়ে গিয়েছে এসআইআর। আর দ্বিতীয় দফায় দেশের ৯টি রাজ্য ও ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চলছে এসআইআর। বিহারে এসআইআরের ফলে প্রায় ৪৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এসআইআর শেষে ৩০ সেপ্টেম্বরে একটি বিবৃতি জারি করে ভারতের প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো। আর সেখানেই তাঁরা সবিস্তারে জানায় এসআইআরে কারও নাম বাদ গেলে কী হবে? কী জানিয়েছে তারা, এমন সমস্যায় পড়লে কী করবেন আপনি?
এসআইআর কী?
এসআইআর হল ভারতের ইলেকশন কমিশনের ভোটার ভেরিফিকেশন ড্রাইভ। অর্থাৎ, দেশের বৈধ ভোটারদের যাচাই করা। তারপর ভোটার তালিকা আপডেট ও সংশোধন করা হয়। ভোটার তালিকায় বিরাট কোনও গরমিল মনে হলে এই নিবিড় সংশোধন করা হয়।
প্রথমে আপনার বিএলও আপনার বাড়ি যাবে। আপনাকে বাড়ির সদস্য প্রতি ২টি করে এনুমারেশন ফর্ম দেবে। যেখানে প্রতিও সদস্যের ভোটার কার্ডের ডিটেলস লেখা থাকবে। এই ২টি ফর্ম আপনি ফিলআপ করলে বিএলও তার মধ্যে একটি আপনাকে দিয়ে, অন্যটি নিয়ে যাবে। আর তারাই বলে দেবে কীভাবে আপনি সেই ফর্ম ফিলআপ করবেন। আর যাঁরা দেশের বাইরে থাকেন, তাঁরা অনলাইনে এই এনুমারেশন ফর্ম ফিলআপ করতে পারবেন।
এনুমারেশন শেষ হলে নির্বাচন কমিশন একটি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। এই তালিকা থেকে নিজের নাম মিলিয়ে নিতে পারবেন আপনি। দ্বিতীয় ধাপের এসআইআরের ক্ষেত্রে ৯ ডিসেম্বর এই তালিকা বেরবে। এই তালিকায় নাম না থাকলে আপনাকে বিএলও-র সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু জরুরি নথি জমা করে নাম তোলার প্রক্রিয়া করতে হবে। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল লিস্ট জারি করা হবে।
ফাইনাল লিস্টে নাম না থাকলে কী করবেন?
আপনার থেকে কমিশন মোট ১১টা নথি চেয়েছে। আপনার কাছে এই ১১টা নথির মধ্যে ১টা নথি থাকবে না এমন হওয়ার কথা নয়। যদি আপনার কাছে সব নথি থাকার পরও কোনও কারণে ফাইনাল লিস্ট থেকে আপনার নাম বাদ চলে গেলে ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই।
ফাইনাল লিস্টে নাম না এলে সাধারণ ভোটার তালিকায় নাম তুলতে যে পদ্ধতি নিতে হয়, সেই পদ্ধতি নিয়েই কাজ হবে। এর জন্য বৈধ কাগজপত্র নিয়ে বিএলওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বা পুরো প্রকিয়াটি অনলাইনেও করতে পারেন। তবে বৈধ কাগজপত্র থাকাটা আবশ্যক।
নাগরিকত্ব ইস্যু!
এসআইআরের খসড়া তালিকায় নাম না থাকলে কোনও চিন্তা নেই। আর ফাইনাল লিস্টে যদি নাম না থাকে তাহলেও চিন্তা নেই। কারণ এই দুই ক্ষেত্রেই নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না। কারণ এসআইআর নাগরিকত্বের সঙ্গে একেবারেই যুক্ত নয়।
কী বলছে পিআইবি?
৩০ সেপ্টেম্বর বিবৃতি দিয়ে ভারতের প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো জানিয়েছে “বিহারে ২০২৫-এর ২৪ জুন ভোটার তালিকায় ৭.৮৯ কোটি মানুষের নাম ছিল। ঐ খসড়া তালিকা থেকে প্রথম পর্বে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ দেওয়ার পর ১ আগস্ট, ২০২৫-এ যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে নাম ছিল ৭.২৪ কোটি ভোটদাতার। ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ৩.৬৬ লক্ষ অযোগ্য ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে এবং ২১.৫৩ লক্ষ যোগ্য ভোটারের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে নাম রয়েছে প্রায় ৭.৪২ কোটি ভোটদাতার“।
তাঁরা আরও বলছে, “একজনও যোগ্য ভোটদাতা যাতে বাদ না পড়েন এবং অযোগ্য কেউ যাতে ভোটার হিসেবে বিবেচিত হতে না পারেন, সেই বিষয়টিকে নিশ্চিত করে সংবিধানের ৩২৬ ধারা মোতাবেক এই কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন। যদি কোনও যোগ্য ভোটদাতার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তিনি নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনের ১০ দিন আগে পর্যন্ত আবেদন জানাতে পারবেন। এছাড়াও কোনও অভিযোগ থাকলে ১৯৫০-এর সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী প্রথমে জেলাশাসক এবং পরবর্তী পর্বে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে প্রতিকারের আবেদন জানানো যেতে পারে“।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours