একসময় ভালই ছাত্রছাত্রী ছিল এই স্কুলে। তারপর ধীরে ধীরে পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে। আশপাশেই রয়েছে আরও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাছাড়া রয়েছে বেসরকারি স্কুলও। ছাত্রছাত্রীরা সেইসব স্কুলে ভর্তি হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে জাগ্রত শিক্ষা নিকেতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
স্কুলে ২ জন পড়ুয়া, ৩ শিক্ষক, রয়েছে প্যারা টিচারও
স্কুলে মাত্র ২ জন পড়ুয়া
বিভিন্ন সরকারি স্কুলে শিক্ষকের অভাবের কথা সামনে আসে। সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই স্কুলে পড়ুয়ার চেয়ে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। মেদিনীপুর শহরের কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের জাগ্রত শিক্ষা নিকেতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া মাত্র ২ জন। সেখানে ৩ জন স্থায়ী শিক্ষক ও একজন প্যারা টিচার রয়েছেন। ওই দুই পড়ুয়া তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তারা চলে গেলে স্কুলের কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় শিক্ষকরা।
পঞ্চাশ বছরেরও বেশি পুরনো মেদিনীপুর শহরের এই স্কুল। ক্লাসরুম রয়েছে। বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল সব রয়েছে। তিনজন শিক্ষক এবং একজন প্যারা টিচার নিয়মিত স্কুলে আসেন। কিন্তু, পড়ানোর জন্য ছাত্র-ছাত্রী নেই। স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, ২ পড়ুয়া পাশাপাশি বসে রয়েছে। একজন শিক্ষক তাদের পড়াচ্ছেন। বাকি দুই শিক্ষক তখন কিছুটা দূরে বসে রয়েছেন। এভাবেই স্কুল চলে। যেদিন ওই দুই পড়ুয়া আসে না, সেদিন স্কুলে বসে থাকতে হয় শিক্ষকদের।
আর এক শিক্ষক পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় এই স্কুলে ১৫ বছরের বেশি শিক্ষকতা করছেন। তিনি বলেন, করোনার আগে পর্যন্ত এই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা মোটামুটি ছিল। কিন্তু, করোনার সময় ২ বছর স্কুলে নতুন কোনও ভর্তি হয়নি। তার ফলেই ছাত্রছাত্রী সংখ্যা কমতে থাকে। গত শিক্ষাবর্ষে ৫ জন পড়ুয়া ছিল। তার মধ্যে ২ পড়ুয়ার অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের অন্য স্কুলে নিয়ে চলে যান। আর একজন চতুর্থ শ্রেণিতে পাশ করার পর অন্য স্কুলে চলে গিয়েছে। এখন তাই ২ জন পড়ুয়া নিয়েই চলছে স্কুল।
সরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষার বেহাল অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে তা মানতে চাইলেন না মেদিনীপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খান। তিনি বলেন, “শিক্ষার বেহাল অবস্থা নয়। করোনার পর থেকে বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রসংখ্যা কমছে। কোথায় গলদ রয়েছে, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা ওই এলাকার জনপ্রতিনিদের নিয়ে আলোচনা করে যাতে এই সমস্যার সমাধান হয় তার চেষ্টা করব।” শিক্ষক ও পৌরসভার চেষ্টায় কি ফের পড়ুয়াদের কোলাহল শোনা যাবে জাগ্রত শিক্ষা নিকেতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে? আশায় বুক বাঁধছেন শিক্ষকরা।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours