ফৌজদারি আদালত অবমাননা হয়েছে বলে উত্তর চায় আদালত। সেই উত্তর অভিযুক্তরা কেউ না দেওয়ায় বিরক্ত হয়েই প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রুল জারি করে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। আর এবার দেওয়া হল নোটিস।
কুণাল ঘোষকে হাজিরার নির্দেশ, সন্তুষ্ট না হলে হতে পারে জেলও! কী বলছে আইন
আদালত অবমাননার মামলায় হাইকোর্টের জারি করা রুল নোটিস পেলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। নারকেলডাঙা থানার মাধ্যমে এই নোটিস পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। নোটিসে আদালত অবমাননার অভিযোগের কথা জানিয়ে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে তাঁকে।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর অবমাননা, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিমকে হেনস্থার অভিযোগে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলাতেই কুণাল ঘোষ-সহ আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করে আদালত।
আদালতের নির্দেশ মেনে আগেই আদালতে হাজির হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। ফৌজদারি আদালত অবমাননা হয়েছে বলে উত্তর চায় আদালত। সেই উত্তর অভিযুক্তরা কেউ না দেওয়ায় বিরক্ত হয়েই প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রুল জারি করে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। আর এবার দেওয়া হল নোটিস।
কেন তাঁকে জেলে পাঠানো হবে না বা শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে ওই নোটিসে। আগামী ১৬ জুন বেলা সাড়ে ১২টায় তাঁকে হাইকোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চের সামনে উত্তরসহ সশরীরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে যে আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি আদালত থেকে বেরতে পারবেন না।
সূত্রের খবর, আদালত অবমাননার এই মামলায় উত্তর না পেলে জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আইন অনুযায়ী অভিযুক্তকে প্রথমে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। উত্তরে আদালত সন্তুষ্ট না হলে আবারও নোটিস দেওয়া হতে পারে। আর একেবারেই উত্তর না পেলে তাঁকে হাইকোর্ট থেকে সরাসরি জেলে পাঠিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও থাকছে।
আইনজীবী ঋজু ঘোষাল জানিয়েছেন, আদালত অবমাননার আইনেই জেলে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা রয়েছে। তিনি জানান, দুটি ক্ষেত্রে জেল হতে পারে। যদি অভিযুক্ত আদালতের নির্দেশ না মানেন ও যদি আদালত অভিযুক্তের দেওয়া উত্তর বা ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়, তাহলে জেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক একটি মামলার কথা মনে করাচ্ছে আইনজীবীদের একাংশ।
কিছুদিন আগে এরকমই একটি মামলায় আইনজীবী অরুণাংশ চক্রবর্তীকে চার দিনের জেল খাটার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাঁর বিরুদ্ধে বিচারপতিদের কুৎসা করার অভিযোগ উঠেছিল।
উল্লেখ্য, সুপার নিউমারারি পোস্ট সংক্রান্ত মামলার শুনানি কেন দ্রুত হচ্ছে না,তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিকাশের দুই জুনিয়র আইনজীবীদের জুতো দেখান তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর এই ঘটনায় প্রধান বিচারপতিকে অভিযোগ জানানো মাত্রই তিনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মামলা গ্রহণ করেন।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েক জন আইনজীবী। তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে বলে স্থির করে দেন প্রধান বিচারপতি। এই বেঞ্চের সদস্যেরা হলেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours