ট্রাম্প কার্ডের জন্য যে সাইট খোলা হয়েছে, তাতে বর্তমানে নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস, কোথায় থাকেন এবং নিজের জন্য নাকি ব্যবসার জন্য রেজিস্টার করছেন, তা দেওয়া যাচ্ছে। trumpcard.gov নামক এই ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে সোনালি রঙের একটি কার্ডের ছবি, যার মধ্যে ট্রাম্পের মুখ বসানো।


নাগরিকত্ব ফেরি করে বেড়াচ্ছেন ট্রাম্প, কত টাকা খসবে গোল্ড কার্ড পেতে?
ট্রাম্পের গোল্ড কার্ড।


ফেল কড়ি, মাখো তেল! আর পাঁচটা জিনিসের মতো চাইলেই কেনা যাবে নাগরিকত্ব। আমেরিকায় এসে গেল গোল্ড কার্ড। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ওয়েবসাইট চালু করলেন যেখানে বিদেশি নাগরিক বা অধিবাসীরা আমেরিকার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। টাকার বিনিময়ে কিনতে পারবেন আমেরিকার নাগরিকত্ব। এর পোশাকি নাম “গোল্ড কার্ড”। কীভাবে পাবেন এই গোল্ড কার্ড? কী কী পদ্ধতিই বা অবলম্বন করতে হবে?


ভারত সহ একাধিক তৃতীয় বিশ্বের বাসিন্দাদের চোখে থাকে ‘বিগ আমেরিকান ড্রিম‘। আমেরিকায় গেলেই স্বপ্নপূরণ হবে, বদলে যাবে জীবন। এই স্বপ্ন নিয়েই প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ আমেরিকায় পাড়ি দেন। কারোর স্বপ্ন পূরণ হয়, কারোর নয়।

আমেরিকায় নাগরিকত্ব কীভাবে পাওয়া যায়?
আমেরিকায় দুইভাবে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। এক, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব। অর্থাৎ যারা আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করছেন, তারা জন্মসূত্রেই আমেরিকান নাগরিকত্ব পান। আরেকটি হল ন্যাচারালাইজেশন। অর্থাৎ কেউ পাঁচ বছরের বেশি সময় আমেরিকায় থাকলে, গ্রিন কার্ডের অধিকারী হলে কিংবা যদি কোনও মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে কমপক্ষে তিন বছর বিবাহিত হন, তবে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে ইংরেজি বলা, লেখার দক্ষতা, ভাল ব্যবহার সহ একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। এছাড়া এইচ-১ বি ভিসা সহ বিভিন্ন ভিসার অধীনে এবং কোয়ালিফাইং মিলিটারি সার্ভিসের ভিত্তিতে আমেরিকার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যেতে পারে।

গোল্ড কার্ডই ‘ট্রাম্প কার্ড’?
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প নাগরিকত্বের নিয়মে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল করতে চেয়েছেন তিনি। এই নিয়ে আমেরিকায় বিস্তর শোরগোল পড়ে যায়। সেখানেই ট্রাম্প খেলেছেন আসল কার্ড। গোল্ড কার্ড। এই কার্ডের দৌলতে বিদেশি নাগরিকরা আমেরিকায় এসে নাগরিকত্ব কিনতে পারবেন। এর জন্য তাদের খরচ করতে হবে ৫ মিলিয়ন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যার অঙ্ক ৪৩ কোটি টাকা।

ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেন, “৫ মিলিয়ন ডলারে আসছে ট্রাম্প কার্ড!” তিনি লেখেন, “হাজার হাজার মানুষ ফোন করে জিজ্ঞাসা করছেন যে কীভাবে বিশ্বের সবথেকে ভাল দেশ ও মার্কেটে থাকার জন্য সাইন আপ করবেন।”

কীভাবে ট্রাম্প কার্ডের জন্য আবেদন করবেন?
ট্রাম্প কার্ডের জন্য যে সাইট খোলা হয়েছে, তাতে বর্তমানে নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস, কোথায় থাকেন এবং নিজের জন্য নাকি ব্যবসার জন্য রেজিস্টার করছেন, তা দেওয়া যাচ্ছে। trumpcard.gov নামক এই ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে সোনালি রঙের একটি কার্ডের ছবি, যার মধ্যে ট্রাম্পের মুখ বসানো।

জানা গিয়েছে, আপাতত ইউরোপ, এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য, উত্তর আমেরিকা, ওসানিয়া, মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান ও আফ্রিকার বাসিন্দারা আমেরিকায় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

গত এপ্রিল মাসেই গোল্ড কার্ডের কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এটা এক ধরনের স্পেশাল ভিসা, যাতে দুই সপ্তাহের কম সময়ে আমেরিকার নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। এখনও পর্যন্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু না হলেও, যারা রেজিস্ট্রেশন করছেন, তাদের শীঘ্রই এই বিষয়ে আপডেট দেওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে।

কী ভেবে গোল্ড কার্ড আনছেন ট্রাম্প?
একদিকে যেখানে অবৈধ বসবাসকারীদের তাড়াতে উদ্যত হয়েছেন, সেখানেই আবার আমেরিকার অর্থনীতি ঘোরাতে গোল্ড কার্ড আনার পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, এতে একদিকে যেমন আমেরিকায় কর্মসংস্থান হবে, পাশাপাশি গোল্ড কার্ডের দৌলতে আমেরিকায় জাতীয় তহবিলে ঘাটতিও কমবে। এই গোল্ড কার্ড আসলে আমেরিকার ইবি-৫ ভিসার রিপ্লেসমেন্ট হবে। ইবি-৫ ভিসায় যারা আমেরিকা থাকেন, তারা গ্রিন কার্ডের জন্য ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করতে পারেন। এবার তাঁর দ্বিগুণেরও বেশি টাকা নিয়েই নাগরিকত্ব বিক্রি করছেন।

সত্যিই কি পাকাপাকি নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে?
ট্রাম্পের কথায় কিন্তু টুইস্ট রয়েছে। তিনি পাকাপাকি নাগরিকত্বের কথা বলেননি। এটা শুধুমাত্র আমেরিকায় ঢোকার একটা সুন্দর পথ। ন্যাচারালাইজেশনের ক্ষেত্রে যা যা শর্ত খতিয়ে দেখা হয়, সেই শর্তগুলিই গোল্ড কার্ডের ক্ষেত্রেও খতিয়ে দেখা হবে।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours