বিচারপতি বলছেন, এই স্কিমের মাধ্যমে রাজ্য কাজের নিরাপত্তার কোনও আশ্বাস দেয়নি। আবার এই স্কিমে কোনও বেকারকেও ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। এটা স্পষ্ট যে দুর্নীতির জন্য যাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, তাদের টাকা দেওয়া হবে।


দু'পক্ষই যখন ক্ষুধার্ত, রাষ্ট্র একপক্ষের মুখে খাবার তুলে দিতে পারে না', ১৯ পাতার রায়ে বিস্ফোরক বিচারপতি অমৃতা সিনহা


চাকরিহারা ‘গ্রুপ-সি’, ‘গ্রুপ-ডি’ কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য সরকার ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। শুক্রবার সেই সিদ্ধান্তে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। রায়ের কপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এভাবে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আদতে দুর্নীতিকে সমর্থন করেছে রাজ্য সরকার।


‘স্কিম’ যদি খারিজ হয়…

এটিও পড়ুন
আদালতের কড়া নির্দেশ, জেলের ভিতরই নির্যাতিতাকে বিয়ে করলেন গায়ক নোবেল!
মদ্যপান, বিবাহ বিচ্ছেদ, বাস্তব জীবনে কেমন ছিল খলনায়ক সৌমিত্রর?


নাইটি কেনার কথাটাও জানতে পেরেছিলেন! বিয়ের ৬ মাস যেতে না যেতেই শেষ অলঙ্কিতা...
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ভাতা দেওয়া হচ্ছে, কারণ তাঁরা আর্থিকভাবে দুর্বল। ফলে ভবিষ্যতে যদি এই ‘স্কিম’ বেয়াইনি বলে খারিজ হয়ে যায়, তাহলে এদের পক্ষে আর টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে না।

সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতেই হবে

সুপ্রিম রায়ে চাকরি বাতিল হয়েছে। এ কথা উল্লেখ করে বিচারপতি বলেছেন, “শীর্ষ আদালতের রায় সবাইকে মানতেই হবে। অপছন্দ হলেও মানতে হবে। বিচারব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস কোনওভাবেই নষ্ট করা যাবে না। রাজ্যের স্কিম, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে শীর্ষ আদালতের রায়কে অতিক্রম করে যেতে চেয়েছে।”

নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, একদিকে রাজ্য শীর্ষ আদালতে রিভিউ আবেদন করেছে রাজ্য। ফলে সেখানে এই স্কিম নিয়ে অনুমতি নিতে পারত। আবার যখন স্কিম নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে, তখন শীর্ষ আদালতের রিভিউয়ের আবেদনের নিষ্পত্তির অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের এই পারস্পরিক মতবিরোধ আচরণ স্পষ্ট নয়।

‘দুর্নীতি, চিটিং, প্রতারণামূলক কাজকে সমর্থন’

বিচারপতি বলছেন, এই স্কিমের মাধ্যমে রাজ্য কাজের নিরাপত্তার কোনও আশ্বাস দেয়নি। আবার এই স্কিমে কোনও বেকারকেও ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। এটা স্পষ্ট যে দুর্নীতির জন্য যাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, তাদের টাকা দেওয়া হবে।

যারা বাড়িতে বসে থাকবে, রাজ্য জেনেবুঝে তাদের টাকা দেবে। তাই রাজ্যকে আদালত কোনওভাবেই সেই স্কিম চালাতে অনুমতি দেবে না। এই স্কিম আসলে দুর্নীতি, চিটিং, প্রতারণামূলক কাজকে সমর্থন করার জন্য করা হয়েছে।

‘রাষ্ট্র এক পক্ষকে খাবার তুলে দিতে পারে না’

মামলাকারী ও চাকরিহারাদের কথা উল্লেখ করে বিচারপতি সিনহা বলেন, “দু’পক্ষই যেখানে ক্ষুদার্থ, সেখানে রাষ্ট্র এক পক্ষকে খাবার তুলে দিয়ে, অন্য পক্ষকে বঞ্চিত করতে পারে না। রাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে। কিন্তু তা কখনই একপেশে হতে পারে না। যে কোনও নাগরিকই জনস্বার্থে এমন মামলা দায়ের করতে পারেন বলে মনে করে হাইকোর্ট।”

যেখানে সরকারের ভাঁড়ার থেকে টাকা খরচ করা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে যে কোনও নাগরিকের প্রশ্ন তোলার অধিকার আছে বলেও বুঝিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours