দু বছরেই সব্যসাচীর সঙ্গে বিজেপির নেতাদের তিক্ততা বাড়তে শুরু করে। মতপার্থক্য তো ছিলই। তবে তৎকালীন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যেভাবে প্রকাশ্যে আসতে থাকে দ্বন্দ্ব, তাতে একরকম পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে বিজেপিতে আর বেশিদিন নয়।
কে সব্যসাচী? কীভাবে উত্থান রাজনীতিতে? কত সম্পত্তির মালিক?
চাকরি হারিয়ে যাঁরা পথে বসে আছেন, তাঁদের উপর প্রকাশ্যে রণমূর্তি ধারণ করতে দেখা গেল সব্যসাচী দত্তকে। বিধাননগরের দাপুটে নেতার গাড়ি আটকাতেই মুখে যা এল, তাই বলে গেলেন বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান। সংবাদমাধ্যমের মুখের উপর বলে দিলেন ‘বেশ করেছি’। ‘কীসের সাংবাদিক’ বলে হুমকি দিতেও শোনা গেল তাঁকে। প্রশ্ন উঠেছে একজন জনপ্রতিনিধির মুখে কেন এমন কথা? পোড় খাওয়া এই নেতার রাজনৈতিক অতীত দেখলেই বোঝা যাবে নিজের দলের নেতাদেরও ছেড়ে কথা বলেননা তিনি।
সেই ১৯৯০ থেকে তৃণমূল করছেন সব্যসাচী দত্ত। ২০০০ সালে প্রথমবার কাউন্সিলর হন তিনি। ২০০৫ ও ২০১০ সালেও পুরভোটে নির্বাচিত হন তিনি। ২০১১ সালে অর্থাৎ তৃণমূল যে বার প্রথম ক্ষমতায় এল, সেবারই বিধায়ক হন সব্যসাচী দত্ত। ২০১৫ সালে যখন কয়েকটি পুরসভা মিলে বিধাননগর পুরনিগম তৈরি হল, তখন সেখানে প্রথম মেয়র হন সব্যসাচী দত্ত। ২০১৬-তেও ফের বিধায়ক হন তিনি।
১৬-র পর থেকে হাওয়া বদলাতে শুরু করে। একদিকে যখন রাজ্যে বিজেপির উত্থান হচ্ছে, অন্যদিকে তৃণমূলের অন্দরে তখন সব্যসাচীর সঙ্গে বিরোধও বাড়ছে। এরই মধ্যে সেই সময় বিজেপিতে থাকা মুকুল রায়ের লুচি-আলুর দম খাওয়ার কথা অনেকেরই মনে আছে। প্রায় ২ ঘণ্টা সব্যসাচীর বাড়িতে থেকে বেরনোর পর মুকুল দাবি করেছিলেন, লুচি খাওয়া ছাড়া আর কিছুই ঘটেনি।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির আসন সংখ্যা বেড়ে যায় অনেকটাই। সেই ফলাফল বেরনোর কয়েক মাসের মধ্যেই অক্টোবরে বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন সব্যসাচী।
দু বছরেই সব্যসাচীর সঙ্গে বিজেপির নেতাদের তিক্ততা বাড়তে শুরু করে। মতপার্থক্য তো ছিলই। তবে তৎকালীন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যেভাবে প্রকাশ্যে আসতে থাকে দ্বন্দ্ব, তাতে একরকম পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে বিজেপিতে আর বেশিদিন নয়। হলও তাই। ২০২১-এ তৃণমূল জেতার পর ওই বছরের অক্টোবরে আবার তৃণমূলে সব্যসাচী। আবার পেলেন পুরভোটের টিকিট।
সম্পত্তির হিসেব বলছে, কোটি কোটি টাকার মালিক সব্যসাচী। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে অডি, ফরচুনার। ২০১৬ সালে যে হলফনামা দিয়েছিলেন, তার হিসেব বলছে, শেয়ার বাজার ও মিউচুয়াল ফান্ড মিলিয়ে সব্যসাচীর মোট বিনিয়োগ ছিল ২ কোটি ২১ লক্ষ টাকা। সেই সময় তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৫৯ টাকা।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours