বারবার দুর্নীতি-দুর্নীতি বললেই তা প্রমাণ হয় না। সওয়াল পর্ষদের। 'দুর্নীতি' বলতে হলে নির্দিষ্ট করে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে। এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়েছে সেটাও প্রমাণ করতে হবে।


দুর্নীতি-দুর্নীতি বললেই সেটা দুর্নীতি নয়', নিয়োগ মামলায় আদালতে বলল পর্ষদ
কলকাতা হাইকোর্ট

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকে ‘দুর্নীতি’ বলতেই নারাজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। নিয়ম না মানলেই সেটা ‘দুর্নীতি’ নয়। সওয়াল প্রাথমিক পর্ষদের। বারবার দুর্নীতি-দুর্নীতি বললেই তা প্রমাণ হয় না। সওয়াল পর্ষদের। ‘দুর্নীতি’ বলতে হলে নির্দিষ্ট করে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে। এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেন হয়েছে সেটাও প্রমাণ করতে হবে। সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ নেওয়া হয়েছে সেটাও প্রমাণ করতে হবে। আদালতে এমনই সওয়াল করেছে পর্ষদ। ক্ষমতার অপব্যবহার দুর্নীতির সজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। এমনই সওয়াল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী কিশোর দত্তের।


আদালতের সওয়াল-জবাব একনজরে…

সওয়াল প্রাথমিক পর্ষদের আইনজীবী কিশোর দত্ত: যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেওয়া যায় যে দুর্নীতি হয়েছে, তাহলেও যে তথ্যপ্রমাণ এবং আবেদনের ভিত্তিতে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছিলেন সেটা কি আদৌ দেওয়া যায়? যারা মূল মামলা করেছিলেন তারা অপ্রশিক্ষিত এবং অযোগ্য।

বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: আপনারা অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যে নিয়োগপ্রক্রিয়া সংগঠিত করেছিলেন সেটা যে আইন মেনে হয়েছে? সেটাই আদালতের সামনে আপনাদের প্রমাণ করতে হবে।”

কিশোর দত্ত: আদালত কখনোই নিজে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ (Fact Finding Committee )-র ভূমিকায় অবতীর্ন হতে পারে না।”

বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: যারা মামলা করেছেন তারা নির্দিষ্ট করে কিছু অভিযোগ এনেছেন। তাদের পক্ষে কি জানা সম্ভব যে পর্ষদ কীভাবে নিয়োগপ্রক্রিয়া সংগঠিত করেছে ? আপনাদের রুদ্ধদ্বার কক্ষে কি আলোচনা হয়েছে সেটা কি মামলাকারীদের পক্ষে জানা সম্ভব ?”

কিশোর দত্ত: এখানে বিচারপতি নিজেই তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর মতো আচরণ করেছেন।

কিশোর দত্ত: অভিযোগ প্রমাণের দ্বায়িত্ব অভিযোগকারীর। কিন্তু এখানে আদালত সেই দ্বায়িত্ব পালন করতে উদ্যোগী হয়েছিল। এই মামলায় সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া নতুন করে লেখা হয়েছিল।

কিশোর দত্ত: নিজের ব্যক্তিগত জ্ঞানকে কখনই একজন বিচারপতি মামলায় তথ্য প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন না।

পাল্টা বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: এই ব্যক্তিগত জ্ঞানের কথা কি আপনারা ডিভিশন বেঞ্চে আগে জানিয়েছিলেন ?

কিশোর দত্ত: না, কিন্তু এটা আমরা যেকোনো সময় আলোচনা করতে পারি। শুধুমাত্র নিয়ম না মেনে চলাকে দুর্নীতি বলা যায় না। বারবার দুর্নীতি – দুর্নীতি – দুর্নীতি বললেই দুর্নীতি প্রমাণ হয় না। দুর্নীতি বলতে হলে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ আর্থিক লেনদেন প্রমাণিত হতে হবে। যদি ধরেও নেওয়া যায় যে ইচ্ছাকৃত ভাবে নিয়োগের নিয়ম মানা হয়নি, তাহলেও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ কোথায় ? সেই অভিযোগ কি আদৌ প্রমাণিত ? অস্পষ্ট অভিযোগ তোলা হয়েছে।

বিচারপতি: এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ জুন। ওই দিন নিজের সওয়াল শেষ করার জন্য পর্ষদের আইনজীবী কিশোর দত্তকে অনুরোধ আদালতের। তারপর ১৩ এবং ১৬ জুন শুনানি হবে। আমরা দ্রুত শুনানি শেষ করতে চাই।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours