১০ হাজার টাকা তৃণমূলকে দিয়েছি’, ভোটার কার্ড হাতে পেয়ে বলছেন ‘বাংলাদেশি’
তাঁর আরও দাবি, কাকদ্বীপের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় অস্বাভাবিক হারে ভোটার বৃদ্ধি পাওয়ার মূলেই এই অসাধু চক্র। মন্টুরাম পাখিরার অভিযোগ, মূলত বাংলাদেশ থেকে চলে আসা মৎস্যজীবীদের উপর।
'১০ হাজার টাকা তৃণমূলকে দিয়েছি', ভোটার কার্ড হাতে পেয়ে বলছেন 'বাংলাদেশি'
সুজন সরকার
তৃণমূলকে নাকি দশ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তারপরই নাম উঠে গিয়েছে ভোটার লিস্টে। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করল বাংলাদেশ থেকে কাকদ্বীপে এসে বসবাসকারী একটি পরিবার। অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্তে যখন কড়া প্রহরা চলছে, সেই সময় এই বক্তব্য নিতান্তই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে শুধু ওই পরিবার নয়, খোদ কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাও অভিযোগ করলেন একাংশ প্রশাসনিক কর্তারা এই বেআইনি কাজ করার পিছনে জড়িত।
উল্লেখ্য,’ভুয়ো’ ভোটার ধরতে বারেবারে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে তিনি একটি টিমও গড়ে দিয়েছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা যাতে বিষয়টিতে বিশেষভাবে নজর দেন তাও নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই ইস্যুতেই বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন মন্টুরাম। সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে ফের একবার সরব হয়েছেন কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক।
তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ,কাকদ্বীপ এসিডও (SDO), বিডিও (BDO) অফিসের কর্মীরা লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এই বেআইনী কাজ করে গিয়েছেন। এর পিছনে রয়েছে বড়সড় চক্র। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এরা এখানে আসে। আর কিছু দালাল চক্র আর কাকদ্বীপের এসডিও, বিডিও অফিসের লোকজন এই অনিয়ম করেছেন। তাদের প্রশাসন খুঁজে বের করুক। এখানে লক্ষ লক্ষ টাকার গল্প। অর্থের বিনিময়ে এই কার্ড বানিয়েছে।”
তাঁর আরও দাবি, কাকদ্বীপের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় অস্বাভাবিক হারে ভোটার বৃদ্ধি পাওয়ার মূলেই এই অসাধু চক্র। মন্টুরাম পাখিরার অভিযোগ, মূলত বাংলাদেশ থেকে চলে আসা মৎস্যজীবীদের উপর। তাঁরা দীর্ঘদিন বসবাস করার পর চক্রের মাধ্যমে টাকা দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলছেন।
কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় ৬ হাজার ভোটারের বিরুদ্ধে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিধায়ক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সমীক্ষাও শুরু হয়েছে। আর তারপরই দেখা গেল কাকদ্বীপের রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ ও প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভোটাররা টাকা দিয়ে নাম তোলার কথা স্বীকার করলেন। এরা মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা। এদের আধারকার্ড, রেশনকার্ড থাকলেও ভোটার নন অনেকেই। তাঁরা বলছেন,টাকা দিতে পারিনি বলে তালিকায় নাম ওঠেনি। অনেকেই টাকা দিয়ে নাম তুলেছে। ভোটার সুজন সরকার বলেন, “আমরা পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছর এখানে আছি। জন্ম সার্টিফিকেট নেই। তবে আধার আছে।” এরপর তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী আগে ভোটার হয়েছেন। আমার কাগজপত্র অনেক দিন আগেই জমা দিয়েছি। কিন্তু হয়নি। পরে অল্প টাকা পয়সা দিয়ে ভোটার হয়ে গিয়েছে। দশ হাজার টাকা তৃণমূল পার্টিকে দিয়েছি। প্রায় চার-পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে…।” তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এই বিষয়টি আগেই তিনি ধরেছেন। বলেন, “SDO কাকদ্বীপ মধুসূদন মণ্ডল, ডিএম সুমিত গুপ্তা জড়িত আছেন। এই কেস সিবিআইকে দেওয়া হোক।”
তৃণমূল মুখপাত্র অরূর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভুয়ো ভোটারের কল দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর যদি এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours