চিকিৎসকের দাবি, তিনি কোন ইউপিআই ট্রানজাকশন করেননি। তা সত্ত্বেও তার অ্যাকউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে।

মেয়ের ভর্তি, ফ্ল্যাটের ইএমআই দেব কীভাবে! কেঁদে কুল পাচ্ছেন না চিকিৎসক, স্যালারি ঢুকলেই কারা যেন...

 টাকা তুলছেন না, অথচ টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। এক হাজার-দু হাজার নয়, লক্ষ লক্ষ টাকা। বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল বিষয়টি। তবে এবার যা হল, তাতে মাথায় হাত চিকিৎসকের। মেয়ের ভর্তি, ফ্ল্যাটের ইএমআই দেওয়ার টাকাটুকুও নেই তাঁর কাছে!


শ্রীরামপুরের চাঁপসরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা গোস্বামী। হুগলির বৈদ্যবাটিতে থাকেন তিনি। বৈদ্যবাটির একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে তাঁর ‘স্যালারি অ্যাকাউন্ট’ আছে। তাঁর অভিযোগ, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর অ্যাকাউন্টে বেতন ঢোকে। ৪ তারিখে তিনি জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্টে কোনও টাকাই নেই।

ওই চিকিৎসক জানান, অন্য একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেও কয়েক লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে তাঁর। সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে তাঁর মেয়ে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য প্রায় তিন লক্ষ টাকা অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন তিনি। সে টাকাও খোয়া যায়। কেষ্টপুরে তাঁর মা এবং মেয়ে থাকেন। তাঁদের টাকা পাঠাতে হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর হাতে কোনও টাকাই নেই।


বৈদ্যবাটির ফ্ল্যাটের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা ইএমআই দিতে হয়। এলআইসি ও মেডিক্লেমের জন্যও মাসে মাসে টাকা লাগে। সেই টাকা কোথা থেকে পাবেন বুঝতে পারছেন না চিকিৎসক। তাঁর দাবি, এর আগে অ্যাকাউন্ট থেকে যখন টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছিল তখন তাঁকে অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই মতো এই নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন তিনি। ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি ব্যাঙ্কের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে চাঁপসরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর অ্যাকাউন্ট কেউ বা কারা টাকা তুলে নিচ্ছে, তা তিনি টের পেয়েছিলেন। কিন্তু কে টাকা তুলছে, কীভাবে তুলছে, সেটা জানা যাচ্ছিল না। আর মার্চ মাসে বেতন ঢোকার পর টাকা তুলতে গিয়ে তিনি দেখেন অ্যাকাউন্ট ফাঁকা! তিনি জানান, তাঁর হিসেব বলছে, এই কয়েকদিনের মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে তাঁর।

চিকিৎসকের দাবি, তিনি কোন ইউপিআই ট্রানজাকশন করেননি। তা সত্ত্বেও তার অ্যাকউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানিয়েছে, আধার কার্ডের সঙ্গে অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করায় সেটি হ্যাক হয়ে গিয়েছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে অনেক সময় অনলাইন ট্রানজাকশন করলে সেখান থেকে টাকা খোয়া যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে কী ঘটেছে বা ওই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ অন্য কারও হাতে আছে কি না, সেটা জানার প্রয়োজন আছে। ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩- তে ফোন করার পাশাপাশি এনসিআরপি ও চন্দননগর সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours