সকাল অবধি খবর ছিল নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ১২ জন নকশালের। কিন্তু বেলা বাড়তেই জানা যায়, সেই সংখ্যাটা প্রায় ৩১। ডিআরজি, এসটিএফ এবং বস্তার ফাইটারের একটি যৌথ দল অভিযান চালায়।

নকশাল মুক্ত ভারত? একদিনে খতম ৩১ মাওবাদী, চলছে অপারেশন...
প্রতীকী ছবি।


নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত ৩১ নকশাল। গুলি-পালটা গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ২ নিরাপত্তা রক্ষীও। ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই জওয়ান। তাঁদের হেলিকপ্টারে করে চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যেই রায়পুরে পাঠানো হয়েছে। বস্তার পুলিশ সূত্রে খবর ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে জাতীয় উদ্যানে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় নকশালদের।


প্রসঙ্গত, সকাল অবধি খবর ছিল নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ১২ জন নকশালের। কিন্তু বেলা বাড়তেই জানা যায়, সেই সংখ্যাটা প্রায় ৩১। ডিআরজি, এসটিএফ এবং বস্তার ফাইটারের একটি যৌথ দল অভিযান চালায়। জাতীয় উদ্যানের ওই এলাকায় নকশালদের উপস্থিতির কথা জানতে পেরেই, রবিবার সকালে অভিযান চালাচ্ছিল নিরাপত্তা বাহিনী। সেই সময় নকশালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর ডিআরজি, এসটিএফ এবং মহারাষ্ট্রের সি-৬০ জওয়ানরা এই অভিযানে যুক্ত ছিল। ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলার ফার্সেগড়ের ওই বনাঞ্চল নকশালদের সক্রিয় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বস্তার পুলিশের আইজি পি সুন্দররাজ জানান, এখনও বনের মধ্যে আরও নকশালদের খোঁজে সার্চ অপারেশন জারি রয়েছে।

জানা যায়, নকশালদের উপস্থিতির খবর পেয়েই রবিবার সকালে ৬৫০ জন নিরাপত্তা রক্ষী, তাঁদের খোঁজে ইন্দ্রবতী ন্যাশানাল পার্কে প্রবেশ করেন। বনের বিভিন্ন দিক থেকে তাঁরা সার্চ অপারেশন শুরু করে বলে জানান, ছত্তিশগড়ের উপ মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা।

দেশের মধ্যে নকশালদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যতম বড় অভিযান এটি বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই বলেন, দেশ তথা রাজ্য থেকে সমূলে নকশালদের উৎখাত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গৃহমন্ত্রী অমিত শাহর নেতৃত্বে ২০২৬ সালের মধ্যেই ছত্তিশগড় নকশালমুক্ত হবে।

এই নিয়ে গত কয়েক দিনে রাজ্যের অ্যান্টি নকশাল অভিযানের কারণে ৮১ জন নকশালের মৃত্যু হয়েছে। বস্তার পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ৩১ জন নকশালের মৃতদেহের সঙ্গেই উদ্ধার হয়েছে বিশাল অস্ত্র ভাণ্ডার। যার মধ্যে রয়েছে একে-৪৭, ইনসাস, এসএল আর এবং .৩০৩ রাইফেল। এ ছাড়াও ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার সহ বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

ওই একই সূত্রে খবর, যে দুই জওয়ান নিহত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন ডিজিআর-এর জওয়ান এবং অন্যজন এসটিএফ-এর জওয়ান। আহত দুই জওয়ান এখন বিপদমুক্ত। সার্চ অপারেশন জারি রাখার জন্য আরও জওয়ানদের ঘটনা স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়।

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই বলেন, “বস্তারের উন্নয়নের পথে সব কাঁটা, নকশালদের দ্বারা স্থাপন করা সব ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস সাফ করা হবে। আমরা স্কুল, হাসপাতাল, জল, রাস্তা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং মোবাইল টাওয়ারের মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলি নিশ্চিত করব।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে শুরু থেকে মাত্র এই ক’দিনের মধ্যে নিরাপত্তা রক্ষীদের অভিযানে ৮১ জন নকশাল নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ৬৫ জন বস্তার ডিভিশনে সাতটি জেলায় নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বিজাপুরের এই অপারেশন যুক্ত রয়েছে।

২০২৪ সালে বিভিন্ন এনকাউন্টারের ঘটনায়, ২১৯ জন নকশালের মৃত্যু হয়। গত বছরের ৪ অক্টোবর, বস্তার অঞ্চলের নারায়ণপুর-দান্তেওয়াড়া আন্তঃজেলা সীমান্ত বরাবর আবুজমাদ এলাকায় নকশাল এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের সংঘর্ষেও ৩৮ জন নকশালের মৃত্যু হয়।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours