যে বাড়িতে আমিষ খাবার খাওয়ার চল রয়েছে, সেখানে কোনও শিশু যখন বড় হয়, সেও আমিষ খাবার খেয়ে অভ্যস্থ হয়। আমিষ খাবার খাওয়া সম্পর্কে মানুষের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। একদল মানুষ আমিষ খাবারকে ভালো এবং অপর দল মানুষ আমিষ খাবারকে খারাপ মনে করেন।


আমিষ খেলে কি সত্যিই পাপ হয়? গরুড় পুরাণের গল্প শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে!
Garud Puran Story: আমিষ খেলে কি সত্যিই পাপ হয়? গরুড় পুরাণের গল্প শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে!


প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের রুচি এবং ইচ্ছে অনুসারে খাবার খান। কেউ পছন্দ করেন নিরামিষ খাবার। আবার কেউ বা পছন্দ করেন আমিষ খাবার। কিন্তু আপনি কি জানেন আমিষ খাবার খাওয়া ঠিক না ভুল? অনেকেই মনে করেন, কোনও ব্যক্তির আমিষ খাবার খাওয়া ঠিক নয়। তা খেলে পাপ হয়। গরুড় পুরাণে আমিষ খাবার খাওয়া নিয়ে এক গল্পের উল্লেখ রয়েছে। জেনে নিন বিস্তারিত।

যে বাড়িতে আমিষ খাবার খাওয়ার চল রয়েছে, সেখানে কোনও শিশু যখন বড় হয়, সেও আমিষ খাবার খেয়ে অভ্যস্থ হয়। আমিষ খাবার খাওয়া সম্পর্কে মানুষের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। একদল মানুষ আমিষ খাবারকে ভালো এবং অপর দল মানুষ আমিষ খাবারকে খারাপ মনে করেন। গীতা সহ অনেক পুরাণে আমিষ খাওয়ার বিষয়ে নানা কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গরুড় পুরাণে আমিষ খাওয়া নিয়ে যা বলে হয়েছে, নিম্নে উল্লেখ করা হল।

গরুড় পুরাণ কী? এটি হল হিন্দুধর্মের ১৮টি মহাপুরাণের অন্যতম। সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ। গরুড় পুরাণের কাহিনিতে শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কিত একটি গল্পের বর্ণনা রয়েছে। যেখানে ঈশ্বর বলেছেন যে, আমিষ খাবার খাওয়া কখনই ন্যায্য হতে পারে না। গরুড় পুরাণে বর্ণিত কাহিনি অনুসারে, শৈশবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যমুনার তীরে বসে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় তিনি দেখতে পেয়েছিলেন একটি হরিণ দৌড়ে আসছে। সেই হরিণটি দৌড়ে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পিছনে লুকিয়ে পড়ে। ওই সময়ে এক শিকারিও হাজির হন। সেই শিকারি শ্রীকৃষ্ণকে বলেন, তিনি হরিণ শিকার করে খেতে চান।

ওই সময় ঈশ্বর শিকারিকে জানান, যে কোনও জীবন্ত প্রাণীকে হত্যা করে খাওয়া পাপ। তারপর শিকারি ঈশ্বরকে জানান, তিনি বেদ পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে, সে জানে না আমিষ খেলে পাপ হয়, নাকি পুণ্য। এরপর শ্রীকৃষ্ণ একটি গল্পের মাধ্যমে ওই শিকারিকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।

মগধ রাজ্যের গল্প

কাহিনি অনুসারে, একবার মগধ রাজ্যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। যার ফলে রাজ্যে একটুও খাদ্য উৎপন্ন হয়নি। এই কারণে মগধের রাজা চিন্তিত হয়ে পড়েন। এবং এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে শুরু করেন। তিনি তাঁর রাজ্যের সকলকে ডেকে পাঠান। এবং নিজের রাজ্যের সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন। এই বিষয়ে একজন মন্ত্রী বলেন যে, সবচেয়ে ভালো এবং সহজ সমাধান হল আমিষ খাবার। কিন্তু মগধের প্রধানমন্ত্রী তা শুনে চুপ ছিলেন। রাজা যখন প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি জানান যে আমিষ খাওয়া সবচেয়ে সস্তা তেমনটা নয়। আবার সবচেয়ে ভালোও যে, তা নয়। তারপর প্রধানমন্ত্রী রাজার কাছে চিন্তা করার জন্য একদিনের সময় চেয়ে নেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী রাতে মন্ত্রীর কাছে যান।

যে রাতে মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে যান, সেখানে গিয়ে তিনি জানান, মহারাজা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এক বৈদ্য বলেছেন যে, যদি কোনও শক্তিশালী ব্যক্তির দুই থেকে তিন কিলো মাংস পাওয়া যায়, তা হলে মহারাজ সুস্থ হতে পারবেন। তোমার শরীর থেকে দুই-তিন কেজি মাংস দিয়ে কি তুমি মহারাজকে বাঁচাতে পারবে? তিনি মাংসের বিনিময়ে মন্ত্রীকে এক লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা এবং রাজ্যে একটি বিশাল সম্পত্তি দেওয়ার কথাও বলেন। তবে, মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে এক লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দেন। এবং জানান, যেন তিনি অন্য কিছু মাংস এনে মহারাজকে বাঁচান। একইভাবে, প্রধানমন্ত্রী অন্য সকল মন্ত্রীর কাছে গিয়ে একই কথা বলেন। তাঁরাও রাজাকে মাংস দেওয়ার জায়গায় স্বর্ণমুদ্রা দেন।

পরের দিন রাজসভায় রাজাকে সুস্থ দেখে সকল মন্ত্রী অবাক হয়ে যান। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী রাজার সামনে এক কোটি স্বর্ণমুদ্রা রাখেন। এবং জানান যে, তিনি দুই-তিন কেজি মাংসের বিনিময়ে সমস্ত মন্ত্রীদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করেছেন। প্রধানমন্ত্রী রাজাকে এরপর প্রশ্ন করেন, ‘মহারাজ, এখন আপনিই বলুন মাংস সস্তা না দামি?’ রাজা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বুঝতে পারেন এবং তাঁর প্রজাদের কঠোর পরিশ্রম করার কথা জানান। কিছু দিন পর, মানুষের কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়। এবং মগধের ক্ষেতে ফসল জন্মায়। শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকে এই গল্প শোনার পর, শিকারি আমিষ এবং শিকার উভয়ই ছেড়ে দে
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours