সোশ্যাল মিডিয়ায় হৃদয়াংশের কাহিনি নজরে আসে অভিনেতা সোনু সুদ ও ক্রিকেটার দীপক চাহারের। তাঁরাও নিজেদের সোশ্যাল হ্যান্ডেল থেকে ক্রাউডফান্ডিংয়ের পোস্ট করেন। সেই পোস্টের দৌলতেই হৃদয়াংশকে সুস্থ করে তুলতে সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে দোকানি, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত-সকলেই আর্থিক অনুদান দেন।

বিরল রোগ পরিণত করেছিল 'জীবন্ত পাথরে', সাড়ে ১৭ কোটির ইঞ্জেকশনে হৃদয়াংশকে নতুন জীবন দিলেন সোনু সুদ থেকে সবজি বিক্রেতা
মা-বাবা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে হৃদয়াংশ।

 সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতা কতটা, তা প্রমাণ হল আবারও। অভিনেতা থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলেক খেলোয়াড়, সবজি বিক্রেতা থেকে ৯টা-৫টার চাকরিজীবী- সবাই এগিয়ে এলেন ২২ মাসের হৃদয়াংশকে বাঁচাতে। নিজেরাই টাকা তুলে জমালেন কোটি কোটি টাকা। এত টাকা কীসে লাগবে? বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত হৃদয়াংশ। তাঁর প্রয়োজন এক বিশেষ জিন থেরাপির, যার একটি ইঞ্জেকশন ডোজের দামই আনুমানিক ১৭.৫ কোটি টাকা।


রাজস্থান পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর নরেশ শর্মা। তাঁর একমাত্র সন্তান হৃদবংশ বিরল জেনেটিক ডিসওর্ডার, স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রোফিতে আক্রান্ত। এই বিরল রোগের জেরে কোমরের নীচ থেকে শরীর অসাড় হয়ে গিয়েছে ২২ মাসের শিশুর। হাজারো চিকিৎসকের কাছে ঘুরে, নানা প্রচেষ্টার পর তাঁরা জানতে পারেন, একরত্তির প্রয়োজন একটি বিশেষ জিন থেরাপি ইঞ্জেকশনের, যা একবারই দেওয়া যায়। জ়োলগেনস্মা নামক ওই ইঞ্জেকশনের দাম ১৭.৫ কোটি টাকা! এই ইঞ্জেকশনের আবার নিয়ম, শিশুর ২ বছরের মধ্যেই দিতে হবে। এরপরে দেওয়া যায় না।

ছেলের চিকিৎসার আশা যখন ছেড়েই দিয়েছেন, সেই সময় গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজস্থান পুলিশের তরফে ক্রাউন্ডফান্ডিং শুরু করা হয়। তখন হৃদয়াংশের বস ২০ মাস। কড়া ডেডলাইন নিয়েই সমস্ত জায়গা থেকে টাকা তোলা শুরু হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় হৃদয়াংশের কাহিনি নজরে আসে অভিনেতা সোনু সুদ ও ক্রিকেটার দীপক চাহারের। তাঁরাও নিজেদের সোশ্যাল হ্যান্ডেল থেকে ক্রাউডফান্ডিংয়ের পোস্ট করেন। সেই পোস্টের দৌলতেই হৃদয়াংশকে সুস্থ করে তুলতে সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে দোকানি, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত-সকলেই আর্থিক অনুদান দেন। বিভিন্ন এনজিও এবং প্রতিষ্ঠানও অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করে। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে জোগাড় হয় ৯ কোটি টাকা।


মায়ের কোলে হৃয়াংশ।

অবশেষে জয়পুরের জেকে লোন হাসপাতালে ওই ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে হৃদয়াংশকে। ইঞ্জেকশনে বাকি দাম আগামী এক বছরে তিন কিস্তিতে মিটিয়ে দেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি হল এক ধরনের জিনগত সমস্যা, যেখানে কোনও ব্যক্তি তাঁর পেশির উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এর কারণ হল ব্রেইন স্টেম ও স্পাইনাল কর্ডে পেশির কোষ নষ্ট হয়ে যায়। এর জেরে পেশিতে দুর্বলতা তৈরি হয়। অঙ্গ-প্রতঙ্গ অচল হয়ে যায়। এমনকী, শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়াও কঠিন হয়ে ওঠে।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours