চলতি সপ্তাহেই সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য তথা কেরলের প্রাক্তন মন্ত্রী, এ কে বালান, এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে ভাল ফল করতে না পারলে, দলের বিখ্যাত কাস্তে-হাতুড়ি-তারা প্রতীক হারাবে সিপিআই(এম)। তখন নির্বাচন কমিশন যে প্রতীক ধার্য করবে, সেই প্রতীকেই লড়তে হবে নির্বাচন।


লোকসভা ভোটের পর 'অক্টোপাস' বা 'প্যাঙ্গোলিন' প্রতীকে লড়বে CPI(M)?
কাস্তে-হাতুড়ি-তারা ছেড়ে নয়া প্রতীকে লড়তে হবে সিপিআই(এম)-কে?


কোঝিকোড়: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর অক্টোপাস বা প্যাঙ্গোলিনের মতো প্রতীকে ভোট লড়তে হবে সিপিআই(এম)-কে? আমরা বলছি না, এমন ভয় পাচ্ছে দলের নেতারাই। চলতি সপ্তাহেই সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য তথা কেরলের প্রাক্তন মন্ত্রী, এ কে বালান, এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে ভাল ফল করতে না পারলে, দলের বিখ্যাত কাস্তে-হাতুড়ি-তারা প্রতীক হারাবে সিপিআই(এম)। তখন নির্বাচন কমিশন যে প্রতীক ধার্য করবে, সেই প্রতীকেই লড়তে হবে নির্বাচন। সিপিআই(এম) নেতার আশঙ্কা, জাতীয় দলের মর্যাদা হারাতে পারে দল। এই অবস্থায় তিনি, দলের কর্মীদের তিনি জাতীয় দলের মর্যাদা এবং দলীয় প্রতীক রক্ষার্থে আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা করতে বলেছেন।

কেরলের কোঝিকোড়ে, কেরল স্টেট ফাইন্যান্সিয়াল এন্টারপ্রাইজ অফিসার্স ইউনিয়নের এক কর্মশালার উদ্বোধন করতে এসে এ কে বালান বলেন, “দলের প্রতীক রক্ষার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা করার সময় এসেছে। অন্যথায়, আমাদের দলকে অদূর ভবিষ্যতে অক্টোপাস বা প্যাঙ্গোলিনের মতো প্রতীকে নির্বাচনে লড়তে হবে। কর্মী-সমর্থকদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সিপিআই(এম) যদি একটি নির্দিষ্ট শতাংশ ভোট এবং আসন জিততে ব্যর্থ হয়, তবে দল তার জাতীয় দলের মর্যাদা হারাবে। এমনকি নির্বাচনী প্রতীক হারানোর ঝুঁকিও রয়েছে। জাতীয় মর্যাদা হারালে, সিপিএমের বিখ্যাত প্রতীকটা ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচন কমিশনের দয়া করে যে প্রতীক বরাদ্দ করবে, সেই প্রতীকেই আমাদের লড়াই করতে হবে।”

কীভাবে কোনও রাজনৈতিক দল জাতীয় মর্যাদা হারায়?

ভারতে কোনও রাজনৈতিক দলের, জাতীয় দলের মর্যাদা পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। এই শর্তগুলি হল –

১. লোকসভা নির্বাচনে চার বা ততোধিক রাজ্যের প্রতিটিতে মোট বৈধ ভোটের অন্তত ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। অথবা, চার বা ততোধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে।

২. লোকসভা নির্বাচনে, লোকসভার মোট আসনের কমপক্ষে ২ শতাংশ আসন জিততে হবে। তবে, এই ২ শতাংশ আসন জিততে হবে অন্তত তিনটি রাজ্য থেকে।

৩. অন্তত চারটি রাজ্যে দলটিকে রাজ্য দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হবে।

লোকসভায় এখন সিপিআই(এম)-এর কী অবস্থা?

বর্তমান লোকসভায়, সিপিআই(এম)-এর মাত্র তিনজন সদস্য আছেন। দুইজন তামিলনাড়ু থেকে এবং অপরজন কেরলের। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১.৭৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বস্তুত, ২০০৯ সাল থেকেই লোকসভা নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে সিপিআই(এম)-এর ফল খারাপ হয়েছে। ২০০৪ সালে, সিপিআই(এম) ৪৩টি লোকসভা আসনে জিতেছিল। ২০০৯ সালে আসন সংখ্যা নেমে এসেছিল ১৬-য়। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে, ৩.২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিল ৯টি আসন। ২০১৯ সালে আসন সংখ্যা নেমে এসেছিল মাত্র তিনে।

রাজ্য বিধানসভাগুলিতে সিপিআই(এম)-এর কী অবস্থা?

বর্তমানে, ভারতের একমাত্র কেরলে ক্ষমতায় আছে সিপিআই(এম)। ২০২১ সালের কেরল বিধানসভা নির্বাচনে, ১৪০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে জিতেছিল কাস্তে-হাতুড়ি-তারা। ৪৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।

২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য সিপিআই(এম) একটিও আসন জিততে পারেনি। পাঁচ বছর আগে, ২৯৪ সদস্যের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সিপিআই(এম) জিতেছিল ২৬টি আসন।

ত্রিপুরাতেও এখন ক্ষমতায় নেই সিপিআই(এম)। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে, ত্রিপুরায় তারা জিতেছিল ১১টি আসন।

বিহারের মহাগঠবন্ধনের অংশ সিপিআই(এম)। জোটে সিপিআই(এম) বিধায়ক আছেন দুই জন।

এছাড়া, ২০২১ সালের অসম বিধানসভা নির্বাচনে একটি এবং ওই বছরই তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে দুটি আসন জিতেছিল সিপিআই(এম)।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours