কেকেআর শিবিরে অন্যতম আকর্ষণ এখন রিঙ্কু সিং। যে রিঙ্কু এক সময় ঝাড়ুদারের কাজ পেয়েছিলেন। কিন্তু আলিগড়ের রিঙ্কুর কপালে লেখা ছিল জীবনের অন্য পথে হাঁটা। আইপিএল রিঙ্কুর সেই স্বপ্নপূরণ করেছে। গরিব পরিবারের ছেলে রিঙ্কু কখনও ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি। সঙ্গে করে গিয়েছেন কড়া পরিশ্রম। তারই ফল এখন পাচ্ছেন।

আলিগড়ের রিঙ্কু সিং যেন কেকেআরের আলাদিনের জিন!
আলিগড়ের রিঙ্কু সিং যেন কেকেআরের আলাদিনের জিন!


কলকাতা: রিঙ্কু সিং… নামটাই যেন যথেষ্ট। ২৬ বছরেই ২২ গজে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছেন আলিগড়ের ছেলে। মিডল অর্ডারে নেমে দ্রুত রান তুলতে পারদর্শী, কঠিন ম্যাচ ঠাণ্ডা মাথায় বের করতে পারদর্শী, ম্যাচ ফিনিশ করতে পারদর্শী। রিঙ্কু সিংয়ের (Rinku Singh) জন্য যাই বলা হয়, যেন কম পড়ে যায়। আইপিএল (IPL) একাধিক ক্রিকেটারের জীবন বদলে দিয়েছে। সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করে রিঙ্কু সিংয়ের নাম। ২০২৩ সালের আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে যশ দয়ালের ওভারে ৫ বলে পরপর ৫টা ছয় মারার পর রাতারাতি রিঙ্কুর জীবন বদলে যায়। তাঁর ব্র্যান্ডভ্যালু আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। বিরাট কষ্টের পথ পেরিয়ে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উঠেছেন রিঙ্কু। কিন্তু আজও তাঁর মনটা মাটির রয়ে গিয়েছে। এ বার তিনি ফের আইপিএলের মঞ্চ মাতাতে তৈরি।

কেকেআর শিবিরে অন্যতম আকর্ষণ এখন রিঙ্কু সিং। যে রিঙ্কু এক সময় ঝাড়ুদারের কাজ পেয়েছিলেন। কিন্তু আলিগড়ের রিঙ্কুর কপালে লেখা ছিল জীবনের অন্য পথে হাঁটা। আইপিএল রিঙ্কুর সেই স্বপ্নপূরণ করেছে। গরিব পরিবারের ছেলে রিঙ্কু কখনও ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি। সঙ্গে করে গিয়েছেন কড়া পরিশ্রম। তারই ফল এখন পাচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ ও অনূর্ধ্ব ২৩ দলে খেলেছেন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে সেন্ট্রাল জোনের হয়েও খেলেছেন। ২০১৪ সালে ১৬ বছর বয়লে তাঁর উত্তরপ্রদেশের হয়ে লিস্ট এ ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ২০১৬-১৭ রঞ্জি ট্রফিতে উত্তরপ্রদেশের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রিঙ্কুর হাতেখড়ি হয়। পরের রঞ্জি মরসুমে ১০ ম্যাচে ৯৫৩ রান করেন রিঙ্কু। এরপর ২০১৭ সালে প্রীতি জিন্টার আইপিএল টিম কিংস ইলেভেন পঞ্জাব কিনে নেয় রিঙ্কুকে।

পঞ্জাবের জার্সিতে অবশ্য রিঙ্কুর আইপিএল অভিষেক হয়নি। ২০১৮ সালের আইপিএল নিলামে ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে রিঙ্কুকে কিনে নেয় কেকেআর। সে বছর ৪টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তিনি। পরের মরসুমে খেলেন ৫টি ম্যাচ। ২০২০ সালে ১টি ম্যাচ খেলেন। হাঁটুর চোটের কারণে ২০২১ সালের আইপিএলে খেলতে পারেননি। এরপর ২০২২ সালে তাঁকে রিটেন করে নাইট শিবির। সে বার ৭টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। নেটে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সুযোগ পেলেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। টানা কয়েকটা মরসুম আইপিএলের ২ বারের চ্যাম্পিয়ন কেকেআর কাটানোর পর অবশেষে ভাগ্যদেবী প্রসন্ন হয় তাঁর উপর। গত বারের আইপিএলে তিনি ১৪টি ম্যাচ খেলেন, করেন ৪৭৪ রান। সর্বাধিক ৬৭*।

আইপিএলে দুরন্ত পারফর্ম করার পর রিঙ্কুর জন্য জাতীয় দলের দরজাও খুলে যায়। এখনও অবধি ১৫টি টি-২০ ও ২টি ওডিআইতে খেলেছেন রিঙ্কু। শেষের দিকে নেমে দ্রুত রান তোলার দক্ষতা রিঙ্কুর একটা আলাদা পরিচিতি এনে দেয়। কেকেআরের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা হয়ে উঠেছেন রিঙ্কু। এখন তিনি স্বপ্ন দেখছেন কেকেআরের হয়ে আইপিএল খেতাব জিততে। কে বলতে পারে, এই রিঙ্কুকেই হয়তো আগামী দিনে কেকেআরের ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখা যেতেই পারে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours