আমাদের বাচ্চাগুলোকে স্কুল থেকে নিয়ে গিয়ে ডান হাতে বন্দুক আর বাঁ হাতে মদের বোতল দিয়ে দিচ্ছে। এবার বলে তোর মাকে মার, তোর বাবাকে মার, কোনও পরিচিত নেই, যাকে ইচ্ছা তাকে মারার নির্দেশ দিত ওরা।"
ডান হাতে বন্দুক, বাঁহাতে মদের বোতল সন্দেশখালির বাচ্চাদের!
সন্দেশখালিতে ফুঁসছেন মহিলারা
সন্দেশখালি: ‘বাঘ’ শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। তাঁকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু সন্দেশখালি এখন ফুঁসছে। না, কেবল শেখ শাহজাহান নয়, সন্দেশখালির গ্রামের মহিলাদের মুখে উঠে আসছে এলাকারই আরও একাধিক ‘গুন্ডার’ নাম। অভিযোগ, ১৩ বছর ধরে তাদের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাঁরা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে লক্ষ্মীবারেই ঝাঁটা-লাঠি হাতে রাস্তায় নামলেন সন্দেশখালির হাজার হাজার ‘লক্ষ্মীরা’। প্রকাশ্যে নাম বললেন বেশ কয়েকজনের। যেমন উত্তম সর্দার, শিবু হাজরা। পাশাপাশি তাঁদের মুখেই উঠে এসেছে শাহজাহানের ‘হর্তাকর্তা’ আমির গাজি, উপপ্রধান পিন্টু বোস, দেবাশিস, লাল্টু বোসের নাম। কিন্তু কেন? ঠিক কী ধরনের অত্যাচার তারা গ্রামে চালাত?
গ্রামের মহিলারাই করছেন ভয়ঙ্কর অভিযোগ। স্কুলের বাচ্চাদের নাকি পড়াশোনা বন্ধ করে হাতে বন্দুক ধরিয়ে দিত ওরা। আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ করলেন এক মহিলা। তিনি বললেন, “আমাদের ছোটো ছোটো বাচ্চাদের ডেকে নিয়ে বলছে রাজনীতি করতে হবে। রাজনীতি না করলে ভাত হবে না তোদের। ভাত দিচ্ছে তো দিদি। তাহলে রাজনীতি না করলে ভাত পাবি কোথা থেকে?”
তিনিও বললেন, “আমাদের বাচ্চাগুলোকে স্কুল থেকে নিয়ে গিয়ে ডান হাতে বন্দুক আর বাঁ হাতে মদের বোতল দিয়ে দিচ্ছে। এবার বলে তোর মাকে মার, তোর বাবাকে মার, কোনও পরিচিত নেই, যাকে ইচ্ছা তাকে মারার নির্দেশ দিত ওরা। আমাদের বাচ্চাগুলোকে বলা হয়, চল ঘর ভাঙতে যেতে হবে, চল ওকে মারতে হবে, জমি আদায় করে নিতে হবে। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। বেশি কথা বললে, পুরুষ মানুষকে তুলে নিয়ে এসে কোদালের বাঁট দিয়ে মারছে।”
সকাল থেকেই ব্য়াপক তেঁতে রয়েছে পরিস্থিতি। বাঁশ, লাঠি, ঝাঁটা হাতে রাস্তায় মহিলারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। পুলিশ তাঁদের আশ্বস্ত করেন, “তদন্ত চলছে। ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়। পুলিশকে মহিলারা একটাই প্রশ্ন করেন, “কাকে কাকে গ্রেফতার করেছেন?” উত্তর দিতে পারেননি পুলিশ কর্তারা। তদন্ত চলছে বলেই দায় সেরেছেন। মহিলারা বলছেন, “পুলিশ একেবারে কাঠের পুতুল। ওরা চুপ। ওদের কিচ্ছু করার নেই। বললেই বলে মিটিয়ে নেও তোমরা।”
সন্দেশখালির মহিলাদের এখন একটাই দাবি। তাঁরা শান্তি চান। আর এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এজেন্সি গেলে কী হচ্ছে জানি না, সংবাদমাধ্যম গেলে কী হচ্ছে জানি না। তবে আইন আইনের পথেই চলছে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours