জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, 'অনেকেই অভিযোগ জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন টাকা পাননি, কেউ টাকা পেলেও ভয় দেখানো হয়েছে। অনেকেই বলতে বলতে কেঁদে ফেলছেন।' প্রশ্ন উঠছে, এতদিন কি সত্যিই কিছু শুনতে পায়নি প্রশাসন? নাকি শোনার চেষ্টাই হয়নি?

 'এত দুর্দশা... জানতামই না', সন্দেশখালির অভিযোগের বহর শুনে চমকে যাচ্ছেন সরকারি অফিসাররাও
সন্দেশখালিতে সরকারি ক্যাম্প।

সন্দেশখালি: বিগত দেড় মাস ধরে শিরোনামে সন্দেশখালি। প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে আগুন যেন ছাই চাপা ছিল এতদিন। আজ কার্যত বিস্ফোরণের আকার নিয়েছে। সন্দেশখালি ইস্যু হাতিয়ার করছেন বিরোধীরা। আঙুল উঠছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। তারপরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। কেমন আছে সন্দেশখালি? কী হয়েছে সেখানে? কী এত অভিযোগ? তা শুনতে সন্দেশখালির একাধিক জায়গায় সরকারি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকছে সেই ক্যাম্প। সেখানে উপস্থিত থাকছেন সরকার আধিকারিকরা। সংগ্রহ করা হচ্ছে অভিযোগ। রবিবার সকাল থেকেই ভরতে শুরু করেছে সেই সব অভিযোগের খাতা।

মিষ্টি জলের পুকুরে নোনাজল ঢুকিয়ে দিয়েছে…, জমি নিয়ে নিয়েছে, লিজের টাকা দেয় না, ভেড়িতে কাজ করার টাকা দিচ্ছে না। এমন সব অভিযোগ উঠছে শিবু হাজরা আর উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে। কেউ বলছে আমি ৪০ হাজার টাকা পাই, কেউ বলছে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা পাই। টাকা কথা বললে নাকি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। এমন সব অভিযোগ শুনে চমকে যাচ্ছেন সরকারি অফিসাররাও।

বিডিও অফিসের এক আধিকারিক বলেন, ‘এলাকার মানুষের এত দুর্দশা, আমরা এতদিন বুঝতে পারিনি। এবার বুঝতে পারছি।’ সকাল থেকে একের পর এক অভিযোগ এসেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ওই আধিকারিক জানান, সংশ্লিষ্ট বিভাগে সব অভিযোগ জমা দেওয়া হবে।


প্রদ্যোৎ সিং নামে সন্দেশখালির এক বাসিন্দা এদিন উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পে। তিনি জানান, উত্তম সর্দার তাঁর কাছ থেকে ৬০০০০ টাকা নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এক মাস পর ফেরত দেবেন। আর পাননি সেই টাকা। শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তির অভিযোগ জব কার্ডের জন্য ২৪ হাজার টাকা ঢুকেছিল তাঁর অ্যাকাউন্টে, তার মধ্যে ২২ হাজার টাকাই দিয়ে দিতে হয়েছিল।

মিষ্টি দোকান থেকে জামাকাপড়ের দোকান, কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে একেক জনের হাজার হাজার টাকা পাওয়া রয়েছে। খাতা নিয়ে ক্যাম্প অফিসে চলে যাচ্ছেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘অনেকেই অভিযোগ জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন টাকা পাননি, কেউ টাকা পেলেও ভয় দেখানো হয়েছে। অনেকেই বলতে বলতে কেঁদে ফেলছেন।’ প্রশ্ন উঠছে, এতদিন কি সত্যিই কিছু শুনতে পায়নি প্রশাসন? নাকি শোনার চেষ্টাই হয়নি?
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours