দলীয় সূত্রের খবর, নব নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান লিখিত ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বকে জবাব দিলেও সেই উত্তরে সন্তুষ্ট হয়নি দলীয় নেতৃত্ব। স্বাভাবিক ভাবেই চাপ বাড়ছিল বেলিয়াতোড়ের নব নির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ পালের উপর।


বাঁকুড়া: বোর্ড গঠনের পরেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত প্রধানের ইস্তফার জল্পনা। বোর্ড গঠনের পরেও বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পিছু ছাড়ছে না তৃণমূলকে। সূত্রের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে নির্বাচিত হওয়ার দু’সপ্তাহের মাথায় গ্রাম পঞ্চায়েতের নব নির্বাচিত প্রধান ইস্তফা দিয়ে চিঠি দিয়েছেন খোদ বিডিওকে । আর সেই ঘটনাকে ঘিরে এবার গুঞ্জন আরও তীব্র হচ্ছে বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতে।


বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০ টি আসনের মধ্যে সবকটিতেই এবার জয়লাভ করে তৃণমূল। গত ১১ অগষ্ট এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়। বোর্ড গঠনের আগে তৃণমূলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান হবেন বিবেক শী ও উপপ্রধান পদ দেওয়া হবে শীলা রুইদাসকে। দলীয় সেই সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দেওয়া হয় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য ও স্থানীয় নেতৃত্বকে। অভিযোগ, বোর্ড গঠনের দিন দলীয় সেই নির্দেশ না মেনে ওই পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য প্রদীপ পালকে প্রধান হিসাবে প্রস্তাব করেন দলেরই আরেক সদস্য।

প্রধান পদপ্রার্থী তৃণমূলের বিবেক শী ও প্রদীপ পালের মধ্যে প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে ভোটাভুটি হলে প্রদীপ পাল ১০-৯ ভোটে বিবেক শীকে হারিয়ে প্রধান পদে বসেন। উপপ্রধান পদে বসেন শীলা রুইদাস। এদিকে দলীয় নির্দেশ অমান্য করায় নব নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ পাল, তৃণমূলের বেলিয়াতোড় অঞ্চল সভাপতি সুশান্ত কর ও পঞ্চায়েত সদস্য শেখ কুতুবউদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব।

দলীয় সূত্রের খবর, নব নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান লিখিত ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বকে জবাব দিলেও সেই উত্তরে সন্তুষ্ট হয়নি দলীয় নেতৃত্ব। স্বাভাবিক ভাবেই চাপ বাড়ছিল বেলিয়াতোড়ের নব নির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ পালের উপর। দলীয় সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যায় প্রদীপ পাল লিখিত ভাবে তাঁর ইস্তফার কথা জানিয়ে বড়জোড়ার বিডিওকে চিঠি দিয়েছেন।

প্রশাসনের তরফে চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করলেও সেই চিঠিতে ইস্তফার কথা লেখা রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে বিডিওকে ইস্তফাপত্র পাঠানোর খবর ছড়িয়ে পড়তেই নতুন করে বেলিয়াতোড়ের রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার দু’সপ্তাহ যেতে না যেতেই কেন ইস্তফা দিতে হল পঞ্চায়েত প্রধানকে? এর পিছনে কী তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই দায়ী?

ইস্তফা দেওয়া পঞ্চায়েত প্রধান ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে চাননি। উপ প্রধানের দাবি, দল বিরোধী কাজ করে প্রধান পদে বসেছিলেন প্রদীপ পাল। তাই তাঁর আরও আগে ইস্তফা দেওয়া উচিত ছিল। তৃণমূলের ব্লক নেতত্বের দাবি দলবিরোধী কাজের জন্য দল পঞ্চায়েত প্রধানকে যে শোকজ করেছিল তার উত্তরে দল সন্তুষ্ট নয়। অবশ্য এ সব নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করেছে। বিজেপির বক্তব্য, কাটমানির ভাগ বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধেই এমনটা হয়েছে।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours