না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলাদেশের প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্জ (Pankaj Bhattacharya)। ছাত্রজীবন থেকেই কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

Pankaj Bhattacharya Death: না ফেরার দেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্যপ্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য
ঢাকা: না ফেরার দেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য। গতকাল মাঝরাতে ঢাকার এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। শ্বাসকষ্ট সহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন এই প্রবীণ রাজনীতিক। এবার সব লড়াই শেষে গতকাল মধ্যরাতে থমকে গেল জীবন। চিরঘুমে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তাঁর প্রয়াণে শোক নেমে এসেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে।


বেশ কয়েকদিন ধরেই একাধিক বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন প্রবীণ রাজনীতিক। গত ১৭ এপ্রিল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শনিবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। দু’দিন জীবনদায়ী ওষুধের উপরই বেঁচে ছিলেন তিনি। অবশেষে থেমে গেল গত এক সপ্তাহ ধরে চলা এই লড়াই। সোমবার মধ্যরাত ১২ টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্য়াগ করেন তিনি।

১৯৩৯ সালের ৬ অগাস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্ম নেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তাঁর শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। ছাত্র অবস্থাতেই কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। এই কারণে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক সরকার ১৯৫৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত ছয়ের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন সহ অন্যান্য সংগ্রামের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন। পরে এই কমিটির কার্যকরী সভাপতি হিসেবেও নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৬ সালে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাবাস করেন। মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ (বাংলা ন্যাশনাল আওমী পার্টি )-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। সবশেষে ২০১৩ সালে তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে নিজের একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।


রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখি ও সংস্কৃতিচর্চায় বরাবর তাঁর আগ্রহ ছিল। চলতি বছরের অমর একুশে বইমেলায় পঙ্কজ ভট্টাচার্যের লেখা আত্মজীবনীমূলক বই ‘আমার সেই সব দিন’ প্রকাশ পায়। বাংলাদেশের গত ছয় দশকের ঘটনাবহুল রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি দলিল হিসেবে গণ্য করা হয় এই বইটিকে। প্রবীণ এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে বাংলাদেশের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মতো রাজনীতিক প্রতিটি দেশেই বিরল।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours