নিহার বাবু জানিয়েছেন, মমতা তাঁর পিসির মেয়ে বা পিসতুতো দিদি। তবে তাঁর সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি।

 ওএমআর বিকৃতির অভিযোগ ফের একধাক্কায় ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওএমআর শিটের প্রাপ্ত নম্বর বদলে বা বাড়িয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে যাঁদের বিরুদ্ধে, সেই তালিকায় ৬০৮ নম্বরে রয়েছে বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়ের নাম। তবে বাকি ৮৪১ জনের থেকে বোলপুরের বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়ের নামের ওজন কিছুটা বেশি বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সম্পর্কে বৃষ্টির পিসি। কীভাবে চাকরি পেয়েছিলেন বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়? সদুত্তর দিতে পারছেন না তাঁরা বাবা তথা মুখ্যমন্ত্রীর মামাতো ভাই নিহার মুখোপাধ্যায়।

বছর কয়েক আগে বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লার্ক তথা গ্রুপ সি পদে চাকরি পেয়েছিলেন বৃষ্টি। TV9 বাংলার তরফে তাঁর বাবা বোলপুরের বাসিন্দা নিহার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাফ জানান, তাঁর মেয়ে মানসিক রোগী। ওষুধ খাওয়া আর ঘুমনো ছাড়া আর কিছুই নাকি ভাল লাগে না তাঁর। বর্তমানে এসএসকেএমে মেয়ে চিকিৎসা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। নিহার বাবুর দাবি, মেয়ে চাকরি পেয়েছিলেন বটে, তবে পদত্যাগও করেন অব্যবহিত পরই।

কিন্তু মেয়ের চাকরিটা হল কীভাবে? নিহার বাবু প্রথমে বলেন, ‘পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল। ও তো পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল।’ আবার কয়েক মুহূর্তেই তাঁর উত্তর বদলে যায়। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় পরীক্ষা দিয়েছিল। ওর তো বিয়ে হয়ে গিয়েছিল, আমার ঠিক জানা নেই।’ তারপর মেয়ের চাকরি নিয়ে এতটাই অনিশ্চয়তা প্রকাশ পায় তাঁর কথায় যে তিনি শেষমেস বলেন, ‘স্কুলে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন।’

নিহারবাবুর কথা মতো স্কুলে গিয়ে জানা যায়, একদিন স্কুলে যোগ দিয়েই নাকি পদত্যাগ করেছিলেন বৃষ্টি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক আচার্য জানান, ২০১৯ সালে চাকরি পেয়েছিলেন বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়। তবে স্কুলের কোনও শিক্ষক বা কর্মী তাঁর ব্যাপারে বিশেষ কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন তিনি। প্রধান শিক্ষক বলেন, নির্দিষ্ট জায়গা থেকে পাঠালে তো স্কুলের কিছু করার নেই।

এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শাসক দলের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাইঝির চাকরি বলে কথা! মমতার সঙ্গে আত্মীয়তার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নিহার বাবু। তিনি জানিয়েছেন, মমতা তাঁর পিসির মেয়ে বা পিসতুতো দিদি। তবে তাঁর সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি। আর রাজনীতি? নিহার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজনীতি করি, কতদিন করব জানি না।’

এই প্রসঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পিসির ভাইঝি বলে শুধু নয়, এমন অনেকেই টাকাও নিয়েছে, আবার চাকরিও নিয়েছে। অনুব্রতর মেয়ে, শ্রীকান্তর ভাই- বহু নেতা আছে। লিস্ট বেরিয়েছে। সম্পর্কগুলো এখনও বুঝতে পারছি না। দেখা যাবে আশপাশের বহু লোককে খুঁজে পাওয়া যাবে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours