সোমবার সকালে এলাকার কয়েকজন প্রমোটারের বিরুদ্ধে লক্ষ্মী সাউ নামে এক গৃহবধূকে অ্যাসিড খাইয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। পরিবারের দাবি এলাকারই তিন প্রমোটার জায়গা হাতানোর জন্য খুন করেছে লক্ষীদেবীকে।


হরিদেবপুরে গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আটক তিন প্রমোটার। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করেছেন এলাকার লোকজন। সোমবার সকালে এলাকার কয়েকজন প্রমোটারের বিরুদ্ধে লক্ষ্মী সাউ নামে এক গৃহবধূকে অ্যাসিড খাইয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। পরিবারের দাবি এলাকারই তিন প্রমোটার জায়গা হাতানোর জন্য খুন করেছে লক্ষীদেবীকে।

সূত্রের খবর, কলকাতার ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে প্রমোটাররাজের সব থেকে বেশি বাড়বাড়ন্ত। কয়েকমাসের ‘টক টু মেয়র’-এর তথ্য ঘাঁটলে দেখা যাবে এই এলাকায় সব থেকে বেশি পুকুর বোজানো, প্রোমোটিং, প্রমোটিং এর নাম করে সাধারণ মানুষকে হেনস্থার অভিযোগ সব থেকে বেশি উঠে এসেছে। এমনকী এই ব্যাপারে খোদ মেয়রও ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগও জানিয়েছিলেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, ওই তিন প্রমোটার একাধিকবার লক্ষীদেবী সাউকে রাতের অন্ধকারে ভয় দেখিয়েছেন। হুমকি দিয়েছেন। বারবার নিজের জমিতে বাড়ি বানাতে বাধা দিয়েছেন। যখন এরপরও কোনও কাজ হয়নি তখন অ্যাসিড খাইয়ে তাঁকে খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

এই বিষয়ে সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার বলেন, “সম্পত্তি ঘিরে বিবাদ। ও তার জেরে প্রাণনাশ এ ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে সেই ঘটনার দিনদিন যে ভাবে বেড়ে চলেছে তাতে প্রশাসনের উচিৎ আরও কড়া পদক্ষেপ করার।” এলাকায় পৌঁছেছেন নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শিশু পাঁজা। তিনি বলেন, “এই ঘটনা কাম্য নয়। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।”

উল্লেখ্য, ঘটনাস্থল হরিদেবপুর। সেখানেই পরিবারের সঙ্গে ছোট একটি জায়গায় থাকতেন লক্ষ্মী দেবী সাউ।লক্ষ্মীদেবীর পাশের ফ্ল্যাটেই থাকতেন সমীর চক্রবর্তী, কিশোর কুমার গুপ্তার এবং ‘ডাক্তারবাবু’ নামে পরিচিত এলাকায় এক ব্যক্তি। অভিযোগ, তাঁরা তিনজন চেয়েছিলেন ওই জায়গাটা প্রমোটিং করতে। তাই ওই মহিলাকে বারবার বলেছিলেন যাতে তিনি নিজের বাড়িতে ছাদ না তৈরি করেন।

এই নিয়ে এর আগেও একাধিকবার বচসা হয়েছে ওই গৃহবধূর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তাঁদের। এমনকী হরিদেবপুর থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই পরিবার। তবে কোনওরকম সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ। এরপর আজ সকালবেলা তিনটের সময় ওই গৃহবধূ প্রাতভ্রমণে বের হন। তবে অনেকক্ষণ না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে। পরে সমীর নামে প্রোমোটারের ফ্ল্যাটের সামনে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার হন লক্ষ্মী। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানান, অ্যাসিড খাওয়ার দরুণ মৃত্যু হয়েছে ওই গৃহবধূর। মৃতার মেয়ের দাবি, অ্যাসিড খাইয়েই তাঁর মাকে খুন করা হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours