পুলিশকে দেহ নিয়ে যেতে বাঁধা দেয় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা৷


টাকার জন্য পুলিশি হেনস্তার অভিযোগ ও লোক লজ্জার ভয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী আদিবাসী যুবক৷ বুধবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গঙ্গারামপুর থানার বিশাল বাহিনী। পুলিশকে দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গঙ্গারামপুর বিধানসভার বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়। পরে বিধায়কের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। এদিকে পুলিশি হেনস্তা ও টাকা নেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম কর্নেল কিস্কু (৩৩)। বাড়ি গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর আদিবাসীপাড়ায়। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী৷ তাঁর বাবা শিক্ষক ও মা স্বাস্থ্য দফতরে চাকরি করতেন।


সূত্রে খবর, বুধবার রাতে ফরাক্কা থেকে গঙ্গারামপুরে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় সন্দেহভাজনভাবে ঘোরাঘোরি করছিলেন ওই যুবক। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁর কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায়, পুলিশ তাঁকে আটক করে। ধৃত যুবকের কাছ থেকে কিছু নেশার সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানায় পুলিশ। কিছু টাকার বিনিময়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার পর পরিবর্তে অতিরিক্ত টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ তেমনটাই। পুলিশি হেনস্তা ও লোকলজ্জায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওই যুবক।

এরপরই বাড়ি থেকে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই বুধবার সকাল থেকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গঙ্গারামপুর থানার আইসি নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয় গ্রামে। গ্রামবাসীরা প্রথমে দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেন। যদিও পরে স্থানীয় বিধায়কের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷

মৃত যুবকের মা চিত্রা মারান্ডি ও অন্যান্য সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ অন্যায় ভাবে তাঁদের ছেলের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। এমনকি আরও ৫০ হাজার টাকার জন্য মানসিকভাবে চাপ দিয়েছে। ছেলের সঙ্গে গাড়ির চালক ছিলেন, সে সবটা তাঁদের বলেছেন। এটা সহ্য করতে পারেননি ছেলে। লোকলজ্জা ও পুলিশি হেনস্থার কারণে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।

এবিষয়ে গঙ্গারামপুর বিধানসভার বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ” শুনেছি, গঙ্গারামপুর থানার এক পুলিশকর্মী ওই যুবককে রাস্তায় আটকান। এবং তাঁর কাছে মাদক আছে বলে জানায়৷ তার কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। সেই মত কয়েক হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানান। কিন্তু আরও টাকার দাবি জানান ওই পুলিশ কর্মী। সেই টাকা দেওয়ার পর বাড়ি গিয়ে লোক লজ্জার ভয়ে আত্মঘাতী হন তিনি।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours