বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থিত হন। অধিবেশনে রেশন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি তোপ দাগেন বিরোধীদের।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায়শই মুখ পুড়ছে রাজ্যের। আদালতের তীরস্কারের মুখে পড়তে হচ্ছে প্রায়শই। এমন অবস্থায় পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, নিয়োগ করতে প্রস্তুত সরকার। কিন্তু প্রায়ই মামলা হচ্ছে। আদালত স্থগিতাদেশ দিচ্ছে। যার কারণে আটকে যাচ্ছে নিয়োগ। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক কথায় নিয়োগ আটকে যাওয়ার দায় নাম না করেই এক প্রকার চাপিয়ে দিলেন বিরোধীদের কাঁধে।


বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থিত হন। অধিবেশনে রেশন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি তোপ দাগেন বিরোধীদের। বলেন, ‘যখনই রাজ্য কোনও নতুন পদে নিয়োগের কথা ভাবছে, তখনই কেউ না কেউ আদালতে চলে যাচ্ছে অভিযোগ নিয়ে। আর আদালতও স্থগিতাদেশ দিচ্ছে।’ এখানেই শেষ নয়, আরও একধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘আদালতের মামলা লড়তে-লড়তে সরকারের সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘আমি বিধানসভা মারফত আদালতকে অনুরোধ করব যাতে মানুষের সুবিধে হয়। বিচারের বাণী যেন নীরবে-নিভৃতে না কাঁদে।’

তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর পাল্টা যুক্তি খাড়া করেছে বিরোধীরাও। বিধান সভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ভুল করলে জনগণ কেস করবে। আর কেস হয় আইনে। আইনগত ভাবে ভুল করলে, গা-জোয়ারি করলে যা হওয়ার তাই হবে।’

তবে এই প্রথম নয়, কয়েকমাস আগে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল থেকে বামপন্থী আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে নিশানা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘আকাশবাবু, প্রকাশবাবু, বিকাশবাবুদের কটা অভিযোগ আদালতে গিয়েছে?’ এরপর মমতা বলেন, ‘২০০ থেকে ২৫০ অভিযোগ গিয়েছে। তাও আমি বলেছিলাম নিয়োগ করে দেব যদি কোথাও ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে।’ এরপর আবারও বিধানসভায় এ দিন সেই প্রসঙ্গে টানলেন তিনি।



উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। কারণ দীর্ঘ ছ’বছরের প্রতীক্ষার পর যখন কাউন্সেলিং শুরু হয়েছিল, তখনই হঠাৎ মোড় ঘুরে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। আদালতে দায়ের হয় নতুন একটি মামলা। সেই মামলার জেরেই নিয়োগ প্রক্রিয়া ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত হয়ে যায়। নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours