জানা যাচ্ছে, শৈলেশ পান্ডে পেশায় ছিলেন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। মাঝেমধ্যে তাঁরা ফ্ল্যাটে আসতেন, জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু এত টাকার আয়ের উৎস কী, তা ভাবতেই পারছেন না তাঁরা।



গাড়ির পর ফ্ল্যাটেও গুপ্তধন! হাওড়ার শিবপুরে উদ্ধার বিপুল অর্থভাণ্ডার। কিন্তু কোথায় পান্ডে ব্রাদার্স? এখনও খোঁজ মেলেনি দুই ভাইয়ের। এবার অরবিন্দ পান্ডে ও তাঁর ভাই শৈলেশ পান্ডের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করল লালবাজার।


একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় শিবপুরে অভিজাত আবাসনে হানা দেন গোয়েন্দারা। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ২ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। সঙ্গে সোনা-হিরের গয়না। হদিশ মেলে দুই অ্যাকাউন্টেরও, যেখানে গচ্ছিত রয়েছে ২২ কোটিরও বেশি টাকা। অ্যাকাউন্ট দুটি ফ্রিজ করেন গোয়েন্দারা। ফ্ল্যাটে হানা দিতেই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। ৬ কোটির মতো টাকা উদ্ধার হয় ফ্ল্যাট থেকেই। রবিবার সন্ধ্যায় সাতটা। শিবপুরের অপ্রকাশ মুখার্জি লেনের আবাসনে হানা দেন কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখার কর্তারা। তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। রাত ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত চলে তল্লাশি ও টাকা গোনার কাজ। উদ্ধার হয় ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রচুর গয়না। আবাসনের তিন তলায় ব্যবসায়ী শৈলেশ পান্ডের আরেক ফ্ল্যাট। শনিবার শিবপুরে গঙ্গার ধারে যাঁর অন্য আবাসনের পার্কিং লটের গাড়িতে উদ্ধার হয় প্রায় আড়াই কোটে টাকা।


জানা যাচ্ছে, শৈলেশ পান্ডে পেশায় ছিলেন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। মাঝেমধ্যে তাঁরা ফ্ল্যাটে আসতেন, জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু এত টাকার আয়ের উৎস কী, তা ভাবতেই পারছেন না তাঁরা। এক আবাসিক বলেন, “পুজোর আগেও এসেছেন। বাইকে করে আসতেন। সঙ্গে দুটো ছেলেও আসত।”


প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের নরেন্দ্রপুর শাখার ২ টি কোম্পানির ওপর অ্যাকাউন্টের ওপর নজর পড়ে। সেখানে কিছু রহস্যময় লেনদেন হচ্ছিল। গত ৬-৭ মাস ধরে চলছিল রহস্যময় লেনদেন। তা দেখেই সন্দেহ হয় ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের। তাঁরা দুই অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। বেগতিক বুঝে তাঁরা ১৪ অক্টোবর হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই অভিযানে নামেন গোয়েন্দারা। রীতিমতো গার্ডেন রিচের আমির খানের ধাঁচেই অ্যাকাউন্টগুলিতে চলছিল লেনদেন। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, শৈলেশের কোম্পানি খাতায় কলমে অনলাইন কোর্স, বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ব্যবসার জন্য নথিভুক্ত। কিন্তু তদন্তকারীরা নিশ্চিত আড়ালেই আমিরের মতো অনলাইন কোনও প্রতারণা চালাত শৈলেশরা। আর সেটাই খুঁজে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। আপাতত পান্ডে ব্রাদার্সের হদিশ পেতে মরিয়া তদন্তকারীরা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours