দুর্নীতির বিরুদ্ধে বারবার এজলাসে গর্জে উঠেছে তাঁর বিচার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে একেবারে ঘোষিত জিহাদ তাঁর। তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, তিনি নিজে বহুদিন বেকার ছিলেন , তাই জানেন বেকারত্বের যন্ত্রণা। বেকারদের চোখের জলে বালিশ ভিজে যেতে দেখেছেন তিনি ! এই যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পেরেছেন বলেই , স্তরে-স্তরে দুর্নীতির পাঁক সাফ করতে উদ্যত হয়েছেন তিনি। তিনি তাঁর অনুভূতি থেকেই আইনি পথে ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসকে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। SSC-তে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ৪ বছর ধরে আন্দোলন করেছেন। অবশেষে, তাঁর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে যে মানুষটির জন্য, তিনি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। 

এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে (Suman De)কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এসএসসি মামলা চলাকালীন আনন্দবাজার পত্রিকা পড়ে জানতে পারেন আন্দোলনরত সোমা দাসের কথা। তারপর তাঁর অনুভূতি 'একজন ক্যান্সার আক্রান্ত রাস্তায় বসে আছেন , আর আমি চেয়ারে বসে আছি !' আর দেরি করেননি তিনি।  

ক্যান্সার আক্রান্ত এই চাকরিপ্রার্থীকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ডেকে পাঠান ও কথা বলেন। জিগ্যেস করেন অন্য কোনও চাকরি করতে তিনি আগ্রহী কি না। কিন্তু সোমা জানিয়ে দেন, তিনি শিক্ষকতাই করবেন।  

তারপর সোমা নিজে একটি মামলা করেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তখন স্কুলশিক্ষা দফতরকে অনুরোধ করেন বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য। বিচারপতি বলেন, প্রয়োজনে রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলা হোক। প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ নেওয়া হোক। আর তাঁকে যদি চাকরিটা নাও দেওয়া যায়, তার কারণ জানানো হোক। এরপরই আসে সুখবর। তিনি বলেন, 'আমি অত্যন্ত খুশি শিক্ষা দফতর আর মুখ্যমন্ত্রী সবাই মিলে তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করেছেন !' 

দীর্ঘদিনের আন্দোলন শেষে স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস। হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগপত্র পেয়ে নলহাটির মধুরা হাইস্কুলে বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন সোমা। 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours