পুজোর (Durga Puja 2022) মুখে রাজ্যে ডেঙ্গির (Dengue) দাপট। শেষ দু’ সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৪০ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪২৪ জন। গত ৭ দিনে শুধু সরকারি হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৬০০ রোগী। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, ডেঙ্গির সংক্রমণ সবথেকে বেশি হাওড়া, জলপাইগুড়ি ও উত্তর ২৪ পরগনা, এই ৩ জেলায়। সূত্রের খবর, প্রতি বৃহস্পতিবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে যে সাপ্তাহিক পর্যালোচনা হয়, তাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য।

ডেঙ্গিতে মৃত্যু: ২ সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গিতে (Dengue) আক্রান্ত হয়ে দু-জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও বদলাল না হাওড়ার ছবিটা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আবর্জনায় ভরে রয়েছে নর্দমা। এর জন্য পুরসভার দিকেই আঙুল তুলছেন বাসিন্দাদের একাংশ। ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকায় মশার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে সচেতনতামূলক প্রচার। গতকাল এমনটাই জানান পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান। অন্য়দিকে মশাবাহিত রোগে মৃত্যু হয়েছে, উত্তরপাড়ার বাসিন্দা, ৩৭ বছরের যুবকের। শোকে স্তব্ধ পরিবার। হুগলিতে হুহু করে বাড়ছে ডেঙ্গি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, চলতি বছরে, হুগলিতে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫০জন।

কলকাতায় উদ্বেগ: জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও উদ্বেগজনক ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি। পুরসভা সূত্রে খবর, গত জানুয়ারি থেকে এখনও অবধি শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত সাড়ে পাঁচশোর বেশি। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি। এই পরিস্থিতিতে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। 

গত ২ বছর দাপট দেখিয়েছে করোনা। সেই প্রকোপ কমতেই কি ফের এবার পালা ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার? কলকাতাজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। গত শুক্রবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভা সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারি থেকে এখনও অবধি শহরে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬৪। ওই একই সময়ে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ৩ হাজারের বেশি। পুরসভা সূত্রের দাবি, ২১ অগাস্ট কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩৬। ১২ দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১২৮!


তৎপরতা পুরসভার: পুরসভার বক্তব্য, ৮১, ৮২ ও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। মূলত টালি নালার দু’পাশের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, শুক্রবার পুরসভার স্বাস্থ্য, নিকাশি-সহ সব বিভাগের আধিকারিক এবং প্রত্যেক বরোর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে।

১৪৪টি ওয়ার্ডেই পুরসভার সমস্ত বিভাগের ১০০ দিনের কর্মীদের ডেঙ্গি মোকাবিলায় কাজে লাগানো হবে। টালি নালার দু’পারে জমে থাকা জঞ্জাল পরিস্কার করতে নৌকা নামানো হবে। যেখানে পুরকর্মীরা যেতে পারবেন না, সেখানে ড্রোনের মাধ্যমে স্প্রে করা হবে মশা প্রতিরোধক। কারও জমি পরিস্কার না করা হলে, পুরসভা নিজেই তা করে দেবে কিন্তু, কলকাতা পুরসভাকে সাফাইয়ের খরচ দিয়ে দিতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় প্রায়ই দেখা যায়, বহুতলের আশেপাশের ফাঁকা জমিতে জঞ্জাল-আবর্জনা ফেলে দিচ্ছেন আবাসিকরা। এমনটা যদি পুরসভার নজরে পড়ে সেক্ষেত্রে বহুতলের আবাসিক এবং জমির মালিক - দু’পক্ষকেই নোটিস পাঠানো হবে। 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours