পুকুরের পাশের ঝোপ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধার ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকালে, সরশুনা থানা এলাকার বাগপোতা রোড এলাকায় ল্যান্ডের মাঠের পাশে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম জয়দেব শীল (৩১)। গত রবিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এই ঘটনায় মোট চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম ঝুমা বিশ্বাস, উত্তম বিশ্বাস, দেবলীনা বিশ্বাস এবং কার্তিক দাস। পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে জেনেবুঝে দেহ ফেলে রেখে সংক্রমণ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, পেশায় রংমিস্ত্রি জয়দেব থাকতেন সরশুনা থানা এলাকার ক্ষুদিরামপল্লির মনসাতলায়। তাঁর পরিবার সূত্রের খবর, রবিবার রাতে একটি ফোন আসার পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরের দিন সকালে বাড়ির লোক তাঁকে ফোন করলে বাড়ির শৌচাগারের পিছনের ঝোপে সেই ফোন বাজতে থাকে। মোবাইল কী করে সেখানে এল, তার উত্তর এখনও মেলেনি। এর পরে মঙ্গলবার সকালে তাঁকে বাগপোতা রোড এলাকার ল্যান্ডের মাঠের পাশের পুকুরপাড়ে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর পরিবারকে খবর দেন স্থানীয়েরা। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন জয়দেবের দাদা নবীন। তিনিই পুলিশে খবর দেন। সরশুনা থানার পুলিশ জয়দেবকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

জয়দেবের দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ অনুমান করেছিল, তাঁকে খুন করা হয়েছে। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, প্যাংক্রিয়াটাইটিসের কারণে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। তবে প্যাংক্রিয়াটাইটিসে আচমকা কী ভাবে ওই যুবকের মৃত্যু হল, সেই প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু তাঁর পরিবার খুনের অভিযোগ তোলে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই ঝুমা ও তাঁর পরিবারের দুই সদস্যকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, জেরায় তাঁরা জানান, বাড়ি থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করেন জয়দেব। তার পরে ঝুমাদের বাড়িতে গিয়ে সেখানেই মারা যান তিনি। তাতে ভয় পেয়ে যান ওই বাড়ির সদস্যেরা। সোমবার সারা দিন কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়িতেই মৃতদেহ রেখে দেন তাঁরা। রাতে রিকশায় মৃতদেহ চাপিয়ে পুকুরের ধারে ঝোপের মধ্যে ফেলে আসেন। রিকশায় বসানোর জন্য জয়দেবের হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। এর পরে এ দিন রাতে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই রিকশাচালক কার্তিককেও।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours