চোখের সামনে দেখেছেন তালিবানি রাজত্ব। দেখেছেন তাদের নৃশংসতা, অত্যাচার। তবে বর্তমানে তিনি ভারতের বাসিন্দা। থাকেন পানাগড়ের পাঠানপাড়ায়। ছোটখাটো ব্যবসা রয়েছে নিজের। সংসার পেতেছেন এই দেশেই। কাবুলে থাকা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কাছে তাঁর কাতর আকুতি, তাঁরা যেন নিজেদের ঘরবন্দি করে রাখেন।

১০ বছর ধরে পানাগড়ের পাঠানপাড়ায় রয়েছেন হাকিব খান। একটি ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে বাস করছেন তিনি। আফগানিস্তানে বিয়ে হওয়ার পরেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি চলে আসেন ভারতে। এতদিন সব ঠিকঠাক চললেও গোটা আফগান মুলুক তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকে চিন্তায় ঘুম উড়েছে হাকিব খানের। স্ত্রী, সন্তানরা কাছে থাকলেও সুদূর আফগান-মুলুকে পড়ে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। অন্য আত্মীয়েরাও থাকেন সেই দেশেই। তাঁদের নিয়েই দুশ্চিন্তা বাড়ছে হাকিবের। তবে স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে আর আফগানিস্তানে ফিরতে চান না হাকিব।

হাকিব খান জানিয়েছেন, তাঁর দেশ আগে ভালোই ছিল। নতুন করে তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি যেন রাতারাতি বদলে গিয়েছে। আফগান মুলুকের প্রতিটি মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি বদলালেও আর দেশে ফেরার ইচ্ছা নেই হাকিবের। তাঁর কথায়, ''বাচ্চাদের ভবিষ্যত্‍ এখানেই উজ্বল। ওই দেশে স্কুল, কলেজের অভাব। পড়াশোনার সুযোগ নেই। এখানে থেকেই বাচ্চাদের মানুষ করব।''

আফগানিস্তানের গত কয়েকদিনের ছবি টিভিতে দেখছেন হাকিব। কাবুল বিমানবন্দরে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানদের ভিড় দেখে আঁতকে উঠছেন 'কাবুলিওয়ালা'। ভীষণ ভয়ঙ্কর সেই ছবি দেখে দু'চোখের পাতা এক হচ্ছে না হাকিবের। তবে কোনওভাবেই আফগানিস্তানে আর ফিরতে চান না হাকিব। অশান্তির কালো মেঘ কেটে ফের নতুন সূর্য উঠুক আফগানিস্তানে। শান্তির বাতাবরণ ফিরে আসুক আফগান-মুলুকে, এখন একটাই প্রার্থনা পানাগড়ের 'কাবুলিওয়ালা' হাকিব খানের।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours