বিগত চার বছরে ত্রিপুরাতে তৃণমূলের নামগন্ধ শোনা যায়নি, যেই নির্বাচন এগিয়ে আসছে আর সেখানে দেখা যাচ্ছে বিজেপি হারবেই এবং বামপন্থীরা জিতবে, ঠিক সেই সময় বামপন্থীদের নির্মূল করতে ত্রিপুরায় গিয়ে হাজির হয়েছে তৃণমূল, এমনটাই মন্তব্য করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। ত্রিপুরায় বিজেপি-তৃণমূল দ্বৈরথ নতুন করে মাথা চাড়া দিলেও দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরা ছিল বামেদের দখলে। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৮ সাল, তারপর ১৯৯৩ থেকে ২০১৮ সাল মোট পঁয়ত্রিশ বছর সিপিএম শাসন কায়েম ছিল ত্রিপুরায়। শেষ কুড়ি বছরের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে গদিচ্যুত করে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। এখন সেই রাজ্যে আসন্ন বিধানসভায় সিপিএমকে সরিয়ে প্রধান বিরোধীর জায়গাটি দখল করতে চাইছে তৃণমূল। আর এই বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছেন না সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী

সুজন বলেছেন, "ত্রিপুরাতে তো তৃণমূলই বিজেপিকে নিয়ে এসেছে। গত চার বছর ধরে যত আক্রমণ, হামলা, অত্যাচার হয়েছে সব সহ্য করেছে ওখানকার সাধারণ মানুষ এবং বামপন্থীরা। মানিক সরকারের ওপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ হয়েছে। তখন চুপ ছিল তাঁরা। এখন নির্বাচনের আগে বামপন্থীদের জেতাটাকে যাতে ঠেকিয়ে দেওয়া যায় সেই চেষ্টাতেই আছে তৃণমূল।" উল্টোদিকে তাঁর মতে, বিজেপি তৃণমূলকে এত গুরুত্ব দিয়ে আসলে তাঁদেরকেই সুযোগ করে দিচ্ছে এবং কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে কম্যুনিস্টদের।

প্রসঙ্গত, তিনি গতবারের ত্রিপুরা বিধানসভাকে মনে করিয়ে বলেছেন সেইসময় নির্বাচনের এক-দেড় বছর আগে কংগ্রেস ভেঙ্গে যে তৃণমূল গঠিত হয়েছিল, তাঁরাই আবার ভোটের আগেই সদলবলে বিজেপিতে চলে গেল। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, "ত্রিপুরায় বিজেপিকে তৈরী করেছে কে? তৃণমূলই করেছে। এই তৃণমূলের বাহিনীই তো ত্রিপুরার বিজেপি।" পাশাপাশি আজ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের গাড়িতে বিজেপির হামলাকে তিনি সমর্থন করেন না বলেই জানিয়েছেন। বলেছেন এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

উল্লেখ্য, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিপিএমের মানিক সরকার আবার ত্রিপুরাতে প্রশান্ত কিশোরের টিম 'আইপ্যাক'-এর ২৩ জন সদস্যকে আটক করার ঘটনায় বিজেপির তীব্র নিন্দা করেছিলেন। আবার কেন্দ্রে বামশীর্ষনেতারা তৃণমূলের সাথে জোট করার একটা ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। সেখানে আজ সুজনের এই মন্তব্যে আরও সংশয় বাড়ল বামপন্থীদের প্রকৃত অবস্থান নিয়ে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours