হাওড়ার আমতা উদয়নারায়ণপুরের পর এবার ঘাটালের প্লাবিত এলাকাও জলে নেমেই ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ঝাড়গ্রামের পর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে ঘাটালের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ত্রাণও তুলে দেন তাঁদের হাতে।


জলবন্দী ঘাটাল সরেজমিনে খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জলে নেমে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনও করেন তিনি। এছাড়া, আকাশপথেও বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। 'পরিকল্পিত বন্যা হচ্ছে' বলেও দাবি করার সঙ্গে সঙ্গে ঘাটাল থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের দাবিতে আবারও সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত না হলে ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, কেন্দ্রের সেচমন্ত্রীর কাছে প্রতিনিধি দল পাঠাবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ঘাটাল মাস্টার প্রজেক্ট, এবং সুন্দরবন এলাকা ও দিঘা সমুদ্র সৈকত এই সব প্রজেক্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠাচ্ছি। প্রত্যেক এক বছর অন্তর দেখছি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বর্ষা বেশি হচ্ছে। বার বার মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বলা হচ্ছে। কেন্দ্র তাতে কিছুতেই অনুমোদন দিচ্ছে না। এদিকে জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে পরিকল্পিত বন্যা হচ্ছে।'


তিনি একইসঙ্গে বলেন, 'এই অবস্থায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমি সৌমেন মহাপাত্র, মানস ভুঁইয়্যাকে বলব কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। এখন সংসদ অধিবেশন চলছে। সঙ্গে শ্রীকান্ত মাহাতো, শিউলি সাহা, জুন মালিয়া, দেব এরা সকলে মিলে গিয়ে কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করুক ও দাবি জানাক।' মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমি মনে করি লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরাও সঙ্গে যান। না হলে কিন্তু ঘাটালকে বাঁচানো যাবে না' বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, '২ হাজার ৮০০ কোটির প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার। দামোদর তীরের নিচু এলাকাগুলির কাজ হবে।' বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'এছাড়াও জল ধরো জল ভরো প্রকল্পে সাড়ে ৩ লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছে, ৫০০ কোটির চেকড্যাম তৈরি হয়েছে' বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'চেকড্যামে জল ঢোকায় কিছুটা বিপদ কমানো গিয়েছে। তবে ঘাটালে আরও প্রচুর কাজের প্রয়োজন।' সেই মতো জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি থেকে এলাকার বিধায়ক, সাংসদদেরও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, ত্রাণ বণ্টনে যেন কোনওরকম দলাদলির অভিযোগ তাঁর কানে না যায়। এছাড়া, বিপদে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে সকলের পাশে দাঁড়ানোরও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours