আফগানিস্তানের তালিবানের সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তুলনা করেছিলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ শফিকুর রহমান বারক। বুধবার জানা গেল, তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের সম্ভাল জেলার পুলিশ সুপার চক্রেশ মিশ্র বলেন, 'মঙ্গলবার গভীর রাতে শফিকুর রহমান ও আরও দু'জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁরা উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশ করেছিলেন।'

পুলিশ সুপারের বক্তব্য, 'ভারত সরকার মনে করে, তালিবান একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। সুতরাং অভিযুক্ত সাংসদের বক্তব্যকে দেশদ্রোহিতা বলেই ধরা হবে।' সোমবার শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'তালিবান তাদের দেশ স্বাধীন করতে চেয়েছিল। তারা চায় আফগানরাই নিজেদের দেশ শাসন করুক।' পরে তিনি বলেন, তালিবান এমন একটি সংগঠন যারা রাশিয়া বা আমেরিকা, কাউকে তাদের দেশ দখল করে রাখতে দেয়নি। তাঁর কথায়, 'তালিবান চায় স্বাধীনতা। একসময় ব্রিটিশের বিরুদ্ধেও আমাদের দেশের মানুষ লড়াই করেছিল।'
শফিকুর রহমানের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেন উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য। তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও তালিবানের সম্পর্কে একই মন্তব্য করেছেন। তাঁর কথায়, 'সমাজবাদী পার্টির পক্ষে সবকিছুই সম্ভব। তাদের অনেকে জন গন মন গাইতে পারে না। অনেকে তালিবানকে সমর্থন করে। সন্ত্রাসবাদীরা ধরা পড়লে অনেকে পুলিশের সমালোচনা করে।'
মৌর্য মঙ্গলবার বিধানসভা ভবনের বাইরে বলেন, তিনি নিজে শফিকুর রহমানকে ওই মন্তব্য করতে শোনেননি। কিন্তু যদি তিনি সত্যিই ওই ধরনের কথা বলে থাকেন, তাহলে ধরে নিতে হবে, তাঁর সঙ্গে ইমরান খানের কোনও পার্থক্য নেই।
গত রবিবার কাবুল দখল করেছে তালিবান। তাঁর পরেই হাজার হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। অনেকে আমেরিকার বিমানে চড়ে তাঁরা তালিবানের কবল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিমানে অবশ্য সকলকে উঠতে দেওয়া হয়নি। বিমান থেকে পড়েও যেতে দেখা যায় দু'জনকে। মঙ্গলবার সেকথা উল্লেখ করে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেন, গত কয়েকদিনে কাবুল বিমানবন্দরে যে ছবি দেখা গিয়েছে, তা সত্যিই দুঃখজনক।
একটি প্রশ্নের জবাবে সুলিভান বলেন, 'গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানে যা ঘটেছে, তাতে বলা যায়, তালিবানকে ঠেকাতে সেখানে আমাদের বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন রাখা দরকার ছিল। তাতে আমাদের তরফেও অনেকে হতাহত হত। বাইডেন তা চাননি।'
মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইঙ্গিত দেন, তালিবানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে আলোচনা করছে তাঁর দেশ। তাঁর কথায়, 'তালিবানের বিরুদ্ধে ঠিক কী করা হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে আন্তর্জাতিক মহল থেকে নিশ্চয় তাদের নিন্দা করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও জারি হতে পারে।'
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours