মাত্র আট দিনের মাথায় পুরুলিয়া শহরের অভিজাত আবাসনে বৃদ্ধ দম্পতি খুনের কিনারা করল পুলিশ। জোড়া খুনের অভিযোগে ওই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীকে শনিবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত। রবিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানির পর ধৃতকে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন পুরুলিয়া জেলা আদালতের বিচারক।

 সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেতকা বিরিবারি এলাকার একটি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী জিতেন্দ্র পাল ওরফে বাপ্পাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জোড়া খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র, নাইলনের দড়ি উদ্ধার করে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবেন সদর থানার তদন্তকারীরা।

প্রসঙ্গত, ৭ অগস্ট পুরুলিয়া শহরের সাহেববাঁধ পাড়ের একটি বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে ক্ষীরোদ সিংহরায় (৭৬) ও তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা সিংহরায় (৭২)-এর দেহ উদ্ধার হয়। সে দিন সকালে পরিচারিকার কাছ থেকে খুনের কথা জানতে পারেন দম্পতির বিবাহিত মেয়ে ও প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে আবাসনে গিয়ে পুলিশ দেখে, বিছানায় মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন কৃষ্ণা। গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে আশপাশ। মেঝেতে গলায় আঘাত-সহ বালিশচাপা অবস্থায় পড়ে ক্ষীরোদের দেহ।

আবাসনে নিরাপত্তারক্ষী-সহ একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ওই ফ্ল্যাটে কী ভাবে দুষ্কৃতী ঢুকল, তা নিয়ে প্রথমে ধন্দে ছিলেন তদন্তকারীরা। পুলিশ-কুকুর নিয়ে এসে তল্লাশি চালিয়েও বিশেষ তথ্য মেলেনি তাঁদের। এর পর আবাসনের ১৮টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। একটি ক্যামেরায় দেখা যায়, ৬ অগস্ট রাতে ওই আবাসনের ছাদ পেরিয়ে যাচ্ছে বাপ্পা। পুলিশ-কুকুরটিও ছাদের উপরে যাওয়ায় বাপ্পাকে ঘিরে সন্দেহ দানা বাঁধে। জোড়া দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, খুন করা হয়েছে ৬ অগস্ট আনুমানিক রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে।

পুলিশ জানিয়েছে, ৬ অগস্ট ওই দম্পতিকে রাতের খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন ক্ষীরোদ-কৃষ্ণার একমাত্র মেয়ে পম্পা সরকার। খাবার খেয়ে ফ্ল্যাট থেকে এক বার নীচেও নামে ওই দম্পতি। সিসিটিভি ফুটেজে তা দেখা গিয়েছে। সমস্ত ফুটেজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে আবাসনের বাইরে থেকে এসে কেউ খুন করেনি। কারণ বাইরের কোনও ব্যক্তির ছবি ধরা পড়েনি ফুটেজে। এর পর বাপ্পাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। অবশেষে শনিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে।

পুরুলিয়া পুলিশ সুপার এস সেলভা মুরুগন বলেন, 'পুলিশি জেরায় ধৃত নিরাপত্তারক্ষী খুনের কথা স্বীকার করেছে।' তবে কেন ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে সে খুন করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours