জাল নোট পাচারে সপ্তম শ্রেণির 'ফার্স্ট বয়'! হতবাক গ্রামবাসীরা। অবাক পুলিশও। মালদহের কালিয়াচক থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের কাছ থেকে পুলিশ ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসনে। এবার স্কুলের মেধাবী পড়ুয়াদের জাল নোট পাচারের কাজে ব‍্যবহার করছে মাফিয়ারা! মাত্র ১৩ বছর বয়সের ওই পড়ুয়া গ্রেপ্তারের ঘটনায় কার্যত এমনই পর্দাফাঁস হল মালদহের কালিয়াচকে। স্কুল পড়ুয়াদের জাল নোটের 'বাহক' হিসাবে ব‍্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

মালদহ জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার জাল নোট সমেত গ্রেপ্তার করা হয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়াকে। ধৃত নাবালকের বাড়ি কালিয়াচকের শাহবাজপুর এলাকার সাদরিটোলা গ্রামে। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে থাকত সে। তারা তিন ভাই ও এক বোন। সে ছোট। শাহবাজপুর এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের 'টপার' সে।গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কালিয়াচকের গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ তাকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এলাকা থেকে জাল নোট সমেত গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ৪০০টি পাঁচশো টাকার জাল নোট এবং ১২০টি দু'হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। কীভাবে সে জাল নোট পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

গ্রামবাসীদের কথায়, 'এই নাবালক মেধাবী ছাত্র (Meritorious Student) কীভাবে জাল নোট নিয়ে ধরা পড়ল, সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। যদি ঘটনা সত্য হয়, তাহলে সে জাল নোটের কারবারিদের খপ্পরে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। কিছু টাকা দিয়ে ক‍্যারিয়ার হিসাবে তাকে ব‍্যবহার করেছে মাফিয়ারা। চক্রের মাথাগুলিকে ধরতে হবে।' দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে মালদহের কালিয়াচকে জাল নোট উদ্ধারের ঘটনা ঘটেনি। অনেকটা স্বস্তিতেই ছিল পুলিশ প্রশাসন। অনেকেই ভেবেছিলেন, পুলিশের তত্‍পরতায় জাল নোট পাচার অন্তত থমকে গিয়েছে মালদহ জেলায়। কিন্তু দীর্ঘদিন পর এই জাল নোটের ঘটনা নতুন করে অস্বস্তি বাড়িয়েছে পুলিশের। শুধু তা-ই নয়, নাবালক স্কুলপড়ুয়া গ্রেপ্তার হওয়ায় চিন্তিত প্রশাসনের কর্তারাও। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় কেন এত বেসরকারি স্কুল গজিয়ে উঠেছে, সেই সমস্ত স্কুলের বৈধতা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। স্থানীয় পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, অর্থাভাবে অনেকেই বিপথগামী হয়ে যায়। ওই স্কুল পড়ুয়া টাকার টোপেই জাল নোট পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে থাকতে পারে। শুরু হয়েছে তদন্ত।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours