তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বের মাঝেই এ রাজ্যে অবাঙালিদের অবদান নিয়ে নতুন তত্ত্বের অবতারণা করলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বাংলার বিকাশে বাঙালিদের চেয়ে অবাঙালিদের অবদান বেশি, বললেন দিলীপ। বুধবার সকালে মধ্য কলকাতায় আয়োজিত এক চা-চক্রে দিলীপ এ কথা বলেছেন। আর তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে ফের বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে।দিলীপ ক্যানিং স্ট্রিটে একটা চা-চক্রে অংশ নিয়েছিলেন। মূলত অবাঙালি প্রধান এলাকা হওয়ায় তিনি ভাষণও দিচ্ছিলেন হিন্দিতেই।

বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে যে প্রচার তৃণমূল চালাচ্ছে, দিলীপ সেই প্রচারকেই খণ্ডন করার চেষ্টা করছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি বলেন, ‘‘বহু বছর ধরে বাইরে থেকে মানুষ বাংলায় এসেছেন কাজের সন্ধানে। আজ নয়, ২০০ বছর আগে থেকে, সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই বাইরে থেকে মানুষ বাংলায় আসতেন।’’ গঙ্গার দু’ধারে যত কলকারখানা রয়েছে, তাতে অন্য রাজ্য থেকে আসা লোকেরাই কাজকর্ম করতেন বলে দিলীপ মন্তব্য করেন। তার পরেই বলেন, ‘‘বাংলার যা বিকাশ হয়েছে, তাতে বাঙালিদের চেয়ে বাংলার বাইরের লোকেদের অবদানই বেশি।’’

দিলীপের প্রশ্ন, ‘‘টাঙ্গা কারা চালাতেন? রিকশা কারা টানতেন? আজ ওরা বাইরের? আর শাহরুখ খান এখানকার?’’ কটাক্ষের সুরে দিলীপ বলেন, ‘‘বিহার থেকে এ রাজ্যে কাজের জন্য আসা মানুষরা বাইরের। আর প্রশান্ত কিশোর নিজের লোক। কেন খুড়তুতো ভাই হয় নাকি!’’

দিলীপের এই কটাক্ষের জবাব দিতে অবশ্য দেরি করেনি তৃণমূল। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলায় যাঁরা থাকবেন, তাঁরাই বাঙালি।’’ কিন্তু বাইরে থেকে এসে যাঁরা প্রচার চালাচ্ছেন, তাঁরা ‘বহিরাগত’ বলে কল্যাণ এ দিন ফের মন্তব্য করেছেন।

দিলীপের সমালোচনা করেছে সিপিএম-ও। প্রাক্তন সাংসদ  শমীক লাহিড়ীর কথায়, ‘‘উনি  বাংলার ভূগোল-ইতিহাস কিছুই জানেন না। ৫ বছর আগেও কেউ চিনত না। তৃণমূলকে ধরে বিধায়ক হলেন। বিজ্ঞাপন দিয়ে নেতা হয়েছেন।’’কংগ্রেস অবশ্য দু’পক্ষেরই সমালোচনা করেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘এই সব মন্তব্য বাংলার মানুষের জন্য অপমানজনক। বাংলার মানুষ কখনও বাঙালি-অবাঙালি বিভাজন বুঝতেন না। এ রাজ্যে বাঙালি আর অবাঙালির মধ্যে কখনও ফারাক করা হত না। এখন সেই বিভাজনটা তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।’’

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours