ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্যান নম্বর দিতেই হবে। এই ডিসেম্বরের মধ্যেই। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন তিনি আর কোনও ওজর শুনবেন না। এর আগে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ছিল সময়। কিন্তু লকডাউনের কারণে সীমা বাড়ায় অর্থমন্ত্রক। এটা ভাল। কিন্তু তিনি বলেননি কী হবে তাঁদের, যাঁদের প্যান নেই তবে আধার আছে। এবং সেটাই তাঁদের একমাত্র জন্ম সালের প্রমাণ!
প্রশ্ন উঠতেই পারে যে এতে আবার অসুবিধা কী? আধার দিয়ে প্যান করিয়ে নিলেই তো হয়! নিশ্চয়ই। কিন্তু প্রথম দিকে যাঁরা আধার করিয়েছেন তাঁদের তো আধারে শুধু জন্মসালটাই লেখা আছে। কী হবে তাঁদের? আর সমস্যার শুরু এখানেই।
২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম আধার কার্ড হাতে তুলে দেওয়া হয় মহারাষ্ট্রের নন্দুরবরের এক অধিবাসীর হাতে। আর ওই সময়ে যাঁরা আধার করিয়েছেন তাঁদের কার্ডে শুধু জন্মসাল লেখা থাকত। কিন্তু আধারকে বিভিন্ন সরকারি কাজে জন্মের পরিচয়পত্র হিসাবে মেনে নেওয়ার কথাও সরকার বলে দিয়েছিল। আর সমস্যা এখানেই। কারণ শুধু তো জন্মসাল নয়, জন্মের দিনটাও তো লেখা থাকতে হবে!
চেন্নাইয়ের অবিনাশ প্রভুনে ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তথ্যাধিকার আইনে আবেদন ঠোকেন এটা নিয়েই। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে তাঁকে জানানো হয়, আর চিন্তা নেই। এবার থেকে আধারে লেখা থাকবে জন্মদিনও।
কিন্তু ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল এই তিন বছরে যাঁরা আধার করেছেন তাঁদের কী হবে? মনে হতেই পারে এই সমস্যাটা তো সহজেই সমাধান করা যায়। যায় কি? শুনে নেওয়া যাক সোনারপুরের কমল বিশ্বাসের গল্প। ১৯৫০ সালে কমল বিশ্বাসের জন্ম। তাঁর জন্মদিন নিয়ে কেউ মাথা ঘামাননি। গ্রামের স্কুলে পড়েছেন। বাংলা পড়তে লিখতে পারেন। ব্যস ওইটুকুই। ভারতের অগণন নাগরিকের মতো তাঁরও জন্মদিন নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন এক আধার কর্মী। ০১.০১.১৯৫০। খোঁজ নিয়ে দেখুন কত সাধারণ শিক্ষিত মানুষের জন্মদিন আধার মেনে জানুয়ারির ১ তারিখেই।কমলবাবুকে ব্যাঙ্ক বলেছে প্যান না করালে, অ্যাকাউন্ট চালু থাকবে না। তিনি এখন দৌড়ে বেড়াচ্ছেন এই এজেন্ট থেকে সেই এজেন্টের ঘরে, প্যান কার্ড করাতে। কিন্তু করতে পারছেন না। কারণ, তাঁর আধার কার্ডে জন্মদিন ছাপা নেই। আর নেই এমন কোনও সরকারি কাগজও যা দিয়ে তিনি বলতে পারেন, “এই রইল আমার জন্মদিনের প্রমাণ!”তাঁর ভাগ্য ভাল, ছেলের মোবাইল নম্বর তাঁর আধারে যোগ করা আছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours