অনাদায়ী ঋণের সমস্যায় এই মুহূর্তে জর্জরিত ভারতের ব্যাংকিং ক্ষেত্র। এর মধ্যে গত কয়েকদিন থেকেই খবরের কেন্দ্রবিন্দুতে ইন্ডাসইন্ড ব্যাংক। শোনা যাচ্ছে, দেশের অন্যতম বৃহৎ এই বেসরকারি ব্যাংকটির মালিকানা হাতবদল হতে চলেছে। আর সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে যাঁর নাম সামনে আসছে তিনি এই মুহূর্তে শুধু ভারতেরই নয়, এশিয়ার সবথেকে ধনী ব্যাংকার।
ইন্ডাসইন্ড ব্যাংক হিন্দুজা গোষ্ঠীর মালিকানাধীন। অন্যদিকে, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংকের নেপথ্যে আছেন উদয় কোটাক; যিনি এই মুহূর্তে এশিয়ার ধনীতম ব্যাংকার। ভারতের বাজারে ইন্ডাসইন্ডের তুলনায় কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংকের অংশীদায়িত্ব অনেক বেশি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, তুলনায় ছোট প্রতিযোগী ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকটি অধিগ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক (Kotak Mahindra Bank)। দুই ব্যাংকের মধ্যে ইতিমধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। শেয়ার বিনিময়ের মাধ্যমে দুই ব্য়াংকের সংযুক্তিকরণ ঘটতে পারে বলে খবরে প্রকাশ। এই আলোচনা আলোর মুখ দেখলে তা ভারতের ইতিহাসের এখনও পর্যন্ত সবথেকে বড় ব্যাংক সংযুক্তিকরণের ঘটনা হতে পারে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
কোটাকের সঙ্গে ইন্ডাসইন্ড ব্যাংক মিশে গেলে দেশের ব্যাংকিং ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন ডেকে আনতে পারে। সেই ক্ষেত্রে দুই ব্যাংকের যৌথ সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৭ লক্ষ কোটি টাকা। সেইসঙ্গে চতুর্থ বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে নিজের অবস্থান আরও পাকা করে ফেলবে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংক। পাশাপাশি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তিন নম্বরে থাকা অ্যাক্সিস ব্যাংকের সঙ্গে ফারাকও অনেকটা কমে যাবে।
ভারতের ২ ট্রিলিয় মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ২০টির বেশি বেসরকারি এবং দশটির বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক আছে। এই মহূর্তে SBI দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলির মধ্যে শীর্ষে HDFC ব্যাংক। ৩০ জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ সাড়ে ১৫ লক্ষ কোটি টাকা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ICICI ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ ১১.৪ লক্ষ কোটি টাকা। আর ৯ লক্ষ কোটি টাকার মোট সম্পদ-সহ তৃতীয় স্থানে আছে অ্য়াক্সিস ব্যাংক।

ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকের তরফে অবশ্য সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংযুক্তিকরণ নিয়ে তাদের সঙ্গে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংকের কোনও আলোচনা চলছে না। সবটাই জল্পনা। তবুও গুঞ্জন থামেনি। ভবিষ্যতে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাংকের সঙ্গে ইন্ডাসইন্ড ব্যাংক সংযুক্তিকরণের খবরকে একেবারে 'কাল্পনিক' বলে এড়িয়ে যেতে রাজি নন তথ্যভিজ্ঞ মহলের একাংশ। তবে সময়ই বলবে সত্যিটা কী। ততদিন ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করাই একমাত্র উপায়।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours