কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হয়েছে আগেই। অতিমারির আবহে সেটা বহাল থাকছেই। এর পাশাপাশি কোনও পড়ুয়া প্রথম কলেজ যাবেন একেবারে ক্লাস করতে। যা আগে ব্যাপক ভাবে হয়নি।

সরকারের ঘোষণা হল, পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতেই স্নাতক স্তরে ১০ অগস্টের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া চালাতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। ফর্মপূরণ থেকে শুরু করে ভর্তির ফি ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া— কোনও কাজেই ছাত্রছাত্রীরা কলেজে যাবেন না। কলেজের জীবনের প্রথম দিনে নথিপত্র যাচাই করা হবে। ১০ তারিখের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, ২৮ অগস্টের মধ্যে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ এবং ১ সেপ্টেম্বর থেকে ভর্তি শুরুর নির্দেশ রয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ এলে সেপ্টেম্বর শেষ কিংবা অক্টোবরের প্রথম থেকে ক্লাস শুরু হলেও হতে পারে।

সব কিছু যাতে নির্বিঘ্নে হয় তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জেলার কলেজগুলিতে। জেলার বিভিন্ন কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোথাও সফ্টওয়ার আপডেটের কাজ চলছে। ছাত্রছাত্রীদের কলেজে আসতে না দিয়ে কবে, কী ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে, তা নিয়ে ফুলপ্রুফ নকশা তৈরিতে ব্যস্ত কিছু কলেজ।

ইতিমধ্যেই নোটিফিকেশেন করা হয়েছে বলে জানালেন বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। সফ্টওয়ার আপডেশনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পরিচ্ছা। হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কী ভাবে কী করা হবে তার নকশা প্রস্তত। কলেজে ভর্তি হতে পড়ুয়াদের কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, অগস্টের প্রথমেই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে কলেজের ওয়েবসাইটে।’’

তবে, এ বারের ভর্তি প্রক্রিয়ার বেশ কিছু জায়গায় খটকা থেকে যাচ্ছে বলে মত কলেজ শিক্ষকদের একাংশের।

তাঁদের ব্যাখ্যা: উচ্চ শিক্ষা দফতর বলেছে ভর্তি হবে মেধার ভিত্তিতে। কিন্তু, উচ্চ মাধ্যমিকে তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া যায়নি।

পরীক্ষিত বিষয়গুলির মধ্যে পড়ুয়া যেটিতে সর্বাধিক নম্বর পেয়েছে, তার ভিত্তিতে অপরীক্ষিত বিষয়ে নম্বর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের আশঙ্কা, মেধার প্রকৃত যাচাইয়ের সুযোগ না থাকায় অনেক ভাল ছাত্র, যাঁরা প্রথম কয়েকটি বিষয়ে কম পেয়েছেন বঞ্চিত থেকে যাবেন। দ্বিতীয় ধোঁয়াশা হল সংরক্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, তফশিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসির বাইরে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়াদের জন্য।

অন্য দিকে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী  শিক্ষাক্ষেত্রে  ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ করা যায় না। কলেজ অধ্যক্ষকের একাংশের কথায়, ‘‘এসসি, এসটি, ওবিসি নিয়েই সংরক্ষণ হয়ে যাচ্ছে ৪৯ শতাংশ। ১ শতাংশ কলেজের হাতে থাকছে। তা হলে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়াদের সুযোগ দেওয়া যাবে কী ভাবে?’’ বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকার এই ব্যপারে কী সিদ্ধান্ত নেয় সেই দিকে তাকিয়ে কলেজগুলি।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours