জ্বর নেই, কিন্তু শুধুমাত্র কনজাংটিভাইটিস রয়েছে, শরীরে ক্লান্তি— এমন উপসর্গের রোগীরও করোনা পজিটিভ এসেছে, জানালেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তিনি বলেন, “জ্বর নেই, কিন্তু করোনা পজিটিভ এমন অনেক রোগীই আসছেন। এঁদের অনেকের মাধ্যমেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এমনও হতে পারে, কারও দু’এক দিন গা হাত-পা ব্যথা ছিল, তিনি করোনা পজিটিভ। নিজে থেকেই সেরে গিয়েছে।” আর এই বিষয়টাই আরও বেশি করে ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের।

ইদানিং জ্বর মানেই একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে আমাদের মনে। করোনা উপসর্গের অন্যতম হিসাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে জ্বরকেই। বহু জায়গায় থার্মাল গানের মাধ্যমে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। জ্বর নেই মানে করোনাও নেই, অনেক ক্ষেত্রেই ধরে নেওয়া হচ্ছে এমন। কিন্তু আদৌ কি তাই? দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের একটি রিপোর্ট ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। সেই রিপোর্ট কিন্তু বলছে অন্য কথা। সেখানে বলা হয়েছে, ৪৪ শতাংশ করোনা আক্রান্তই জ্বরের উপসর্গহীন। ৩৪.৭ শতাংশের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি-কফের সমস্যা রয়েছে। মাত্র ১৭.৪ শতাংশের ক্ষেত্রে জ্বর ছিল করোনা আক্রান্তের। এ বিষয়ে শহরের চিকিৎসকরা কী বলছেন? কারা আক্রান্ত হচ্ছেন? কেমন রোগী আসছেন তাঁদের কাছে?

“প্রায় উপসর্গহীন যাঁরা আসছেন, কিন্তু কোথাও যেন শরীর দুর্বল লাগছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে। তবে জ্বর থাকছে না অনেকেরই। কারও হয়ত সামান্য সর্দি-কাশি বা গলায় ব্যথা ছিল। কারও ক্ষেত্রে হয়তো ঝিমুনি ভাব। এগুলিকে আটিপিক্যাল উপসর্গ বলা যেতে পারে, কিন্তু অবহেলা করা ঠিক হবে না”, এমনটাই মত মেডিসিনের চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের।

কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর মঙ্গলবার যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, সেখানে বলা হয়েছে আগের ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২,১৩৪। প্রথম থেকেই জ্বরের সঙ্গে করোনার সম্পর্কের উপরই জোর দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু জ্বর দেখেই কি করোনা বলা যায়? শহরের চিকিৎসকদের কাছে যে সমস্ত রোগী আসছেন, যাঁরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই কি জ্বর ছিল? তাপমাত্রা মেপে জ্বর না থাকলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটা আত্মবিশ্বাস জন্ম নিচ্ছে। আর এখানেই সাবধান করছেন চিকিৎসকরা।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours