রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা হাফিজ আলম সৈরানির প্রথম প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার উত্তর কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরি হলে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন সেলিম-অধীর-শুভঙ্কর-বিমানরা। 


অধীর বলেন, "আমি যখন রাজনীতি শুরু করি তখন নকশাল করেছি। না বুঝেই করেছিলাম। আবেগে করেছি। ভেবেছি বিপ্লব হবে, ঝামেলা নেই, পড়াশোনা করতে হবে না। সব থেকে সহজ। কিন্তু পড়ে দেখলাম গড়বড়ে।"


ছাব্বিশের ভোটে ফের বাম-কংগ্রেস জোট? অধীর-সেলিমের ইঙ্গিত তেমনটাই
জোট হচ্ছে তবে?


ছাব্বিশের ভোটে তৃণমূল আর বিজেপিকে হারাতে জোট ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারকে সামনে রেখেই তা কার্যত বুঝিয়ে দিলেন কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী আর সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। যে সময় তাঁরা জোট গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, সেই সময় একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও। সেখানেই বামপন্থী ও ডানপন্থী দুই দলের নেতাদের এই বার্তা আগামী বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক কারবারিরা।


কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকারের মুখে প্রায়শই শোনা যায়, ২৯৪ আসনে প্রার্থী দিতে আগ্রহী তারা। সেই কারণেই বারেবারে যে প্রশ্ন রাজনীতির অলিন্দে ঘুরপাক খায়, তা হল জোট হচ্ছে কি না। কারণ, সেই একুশের বিধানসভা ভোটের পর থেকে লাগাতার নির্বাচনে এই দুই দল জোট করেই ভোট বৈতরণী পারের চেষ্টা করেছে। কিন্তু ছাব্বিশের ভোটে বাম-কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ কী? হাফিজ আলম সাইরানীর স্মরণসভায় অধীর, সেলিমরা তাঁদের ভাষণে বুঝিয়ে দিলেন মেরুকরণের রাজনীতি নয়। বরং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে জোট ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।


 আলম সৈরানির প্রথম প্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার উত্তর কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরি হলে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন সেলিম-অধীর-শুভঙ্কর-বিমানরা। অধীর বলেন, “আমি যখন রাজনীতি শুরু করি তখন নকশাল করেছি। না বুঝেই করেছিলাম। আবেগে করেছি। ভেবেছি বিপ্লব হবে, ঝামেলা নেই, পড়াশোনা করতে হবে না। সব থেকে সহজ। কিন্তু পড়ে দেখলাম গড়বড়ে। তবে দিল্লিতে গিয়ে শিখেছি আমি তো পড়াশোনা করিনি, কিন্তু ভিতর থেকে অনেক কিছু শিখেছি।” তিনি আরও বলেন, “কে হিন্দু,কে মুসলিম,কে রাজবংশী বা মতুয়া এই বিচার করে রাজনীতি বাংলায় হত না। ধর্ম,জাতের নামে রাজনীতি ছিল উত্তর ভারতে। বাংলায় ছিল শ্রেণি সংগ্রাম, জাত বা ধর্মের নামে লড়াই নয়। এখন দুর্ভাগ্যজনক ভাবে উত্তর ভারতের সেই পরিস্থিতি বাংলায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এর মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থী ঐক্য দরকার।” আর সেলিম বলেন, “মানুষ যখন সরকারের কাছে জবাব চাইছে, সেই সময়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিচালিত সরকার মানুষকে ব্যতিব্যস্ত রাখছে নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ জোগাড় করতে বলে! ভয় পেলে চলবে না। গণতান্ত্রিক,ধর্মনিরপেক্ষ সব পক্ষ একসঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”

এখানে উল্লেখ্য, ২০২১ সালে কংগ্রেস-বাম ও আইএসএফ মিলে তৈরি করেছিল সংযুক্ত মোর্চা। তবে ২০২৪-এ লোকসভা ভোটে বামেদের ছাড়াই একা-একা লড়েছিল আইএসএফ। সেই সময় বামেদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছিলেন নওশাদ। মুর্শিদাবাদে আইএসএফ প্রার্থীর নাম ঘোষণার করে দেওয়া হয়। সেখানে প্রার্থী দিয়ে দেয় সিপিএম। তারপর নওশাদ বলেন, তাঁরা জোটে লড়বেন না। অপরদিকে, ডায়মন্ড হারবারের ক্ষেত্রেও দেখা যায় একা একা প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ। এবার কী হবে? জানা যাচ্ছে, আসন্ন বিধানসভার জন্য একসঙ্গে লড়তে চেয়ে বিমানকে চিঠি পাঠিয়েছেন নওশাদ। তবে তার উত্তর আসেনি। ফলে শুধুই বাম-কংগ্রেস জোট নাকি আবার গঠিত হবে সংযুক্ত মোর্চা তা সময় বলবে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours