ওই স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, 'ছেলেমেয়েরা স্কুলমুখী নয়। একদিন আসে, চারদিন আসে না। বাবা-মায়েরাও পাঠায় না। খাতায়-কলমে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০, কিন্তু হাজিরা দিচ্ছে পাঁচজন।' জানা গিয়েছে, শুধুই ক্লাস এইট নয়। বাকি শ্রেণির পড়ুয়াদের করাতে বর্ণপরিচয়। পারে না তারা নিজের নাম লিখতেও।
ক্লাস এইটে হচ্ছে 'বর্ণপরিচয়', মালদহের স্কুলে 'শূন্যতা'কে ভেদ করতে পারছে না শিক্ষার আলো
মালদহের সেই স্কুল
করোনা পরবর্তী সময়ে ঠিক এমনই ছবি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সে তো কবে কার কথা। মালদায় এখনও কেন এমন দশা? কাঠগড়ায় শিক্ষাব্যবস্থা।
পুরাতন মালদহের সাহাপুরের একটি সরকারি স্কুলে ক্লাস এইটের পড়ুয়াদের নতুন করে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ শেখাতে হচ্ছে শিক্ষককে। ব্ল্যাকবোর্ডে অ-আ-ক-খ লিখে ১২-১৩ বছরের পড়ুয়াদের হচ্ছে বর্ণপরিচয়। করোনা পর্বে অনলাইন পড়াশোনা, যার জেরে এই প্রকার ছবি রাজ্য তথা দেশজুড়ে কিছুটা হলেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই করোনা কেটে গিয়েছে বহুদিন। এখন সবটাই স্বাভাবিক। আর সেই সময়েও কেন অস্বাভাবিক ছবি মালদহে?
শিক্ষকদের আরও দাবি, ‘পড়ুয়াদের মস্তিষ্কে অচলাবস্থা তৈরির দায় কিছুটা রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা। কোনও পাশ-ফেল নেই। ফলত, ছেলেমেয়েরাও পড়াশোনা নিয়ে চিন্তিত নয়। এছাড়াও ঠিক করে যে ক্লাস হবে তারও কোনও ব্যবস্থা নেই। স্কুলের সব কাজ করেন ৫ জন শিক্ষক। নেই ক্লাস নেওয়া থেকে স্কুলের ঘণ্টা বাজানোর লোকও।’
সাম্প্রতিককালে রাজ্যের স্কুলগুলোর পড়ুয়াশূন্যতার কথা উঠে এসেছিল কেন্দ্রীয় রিপোর্টেও। চলতি বছরের একটি রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তিন হাজারের বেশি এমন স্কুল রয়েছে যেখানে কোনও পড়ুয়াই ভর্তি হয়নি। পড়ুয়াশূন্য হয়ে কার্যত ঝাঁপ বন্ধ করেই পড়ে রয়েছে এই স্কুলগুলি। অন্যদিকে, গত শিক্ষাবর্ষে একজন শিক্ষক নিয়ে চলা স্কুলে সংখ্যা ৬ হাজার ৩৬৬টি।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours