বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, "উপাচার্যের নজরে যখন আনা হয়, উনি সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে আগামিকালের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। কোনও অধ্যাপক হয়তো ইংরেজি থেকে ট্রান্সলেট করতে গিয়ে বা টাইপ করতে গিয়ে এই ভুল হয়েছে।"
ব্রিটিশরাজ চলছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে? বিপ্লবীদের বানিয়ে দেওয়া হল সন্ত্রাসবাদী!
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র নিয়ে বিতর্ক।
পশ্চিম মেদিনীপুর: দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা লড়াই করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন, তাদের কি না সন্ত্রাসবাদী তকমা! মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রশ্নপত্র সামনে আসতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রীকে ইমেল মারফত অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। নিন্দায় সরব বিপ্লবীদের পরিবার থেকে শিক্ষানুরাগীরা।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ১১ নং প্রশ্নে লেখা রয়েছে “মেদিনীপুরের তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নাম করো, যারা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হন?”। ব্রিটিশ শাসনকালে ইংরেজরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সন্ত্রাসবাদী বলতেন। ২৭৫ বছর পর আবার কি ব্রিটিশরাজ ফিরে এল বাংলায়?
'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন জানাননি?', নগ্ন ছবি বিতর্কে মুখ খুললেন রাজন্যার বান্ধবী
চিনের নতুন শয়তানি শুরু! এবার ভারতকে ডুবিয়ে মারার চাল? বড় আশঙ্কা প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
রাঁচিতে শাহর সঙ্গে বৈঠকে থাকছেন না মমতা, কে যাচ্ছেন?
কীভাবে রাজ্য়ের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী বলে উল্লেখ করা হল? বিতর্কের শুরু এখান থেকেই। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রশ্নপত্র নিয়ে নিন্দা করেছেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষানুরাগীদের সংগঠন শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চও।
এদিকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “উপাচার্যের নজরে যখন আনা হয়, উনি সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে আগামিকালের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। কোনও অধ্যাপক হয়তো ইংরেজি থেকে ট্রান্সলেট করতে গিয়ে বা টাইপ করতে গিয়ে এই ভুল হয়েছে।”
মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী অ্যাখ্যা দেওয়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ইমেইল মারফত অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তথা শিক্ষানুরাগী ডঃ শঙ্কর গুচ্ছাইত।
স্বাধীনতা সংগ্রামী বিমল দাশগুপ্তের ছোট ছেলে রণজিৎ দাশগুপ্ত এই বিতর্ক নিয়ে বলেন, “ইতিহাসে যাদের নাম লেখা, তাদের কাছে এটা লজ্জার বিষয়”। শিক্ষানুরাগী সংগ্রামী মঞ্চের সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “ছাত্রমহল ও সমাজের সমস্ত স্তরে যে বার্তা গিয়েছে, তা অত্যন্ত নক্কারজনক। আমরা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও ইতিহাস বিভাগের দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তারা প্রকাশ্য়ে ক্ষমা চাক।”
বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে আমি আরও আঁতকে উঠলাম। এটাই এগিয়ে বাংলার নমুনা। যে মেদিনীপুর ক্ষুদিরাম বসু, বীরেন্ শাসমল, মাতঙ্গিনী হাজরা, সুশীল ধারা , সতীশ সামন্তের ভূমি, মেদিনীপুরের হেন কোনও ব্লক নেই, গ্রাম নেই যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীর খোঁজ মিলবে না, সেই মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী বলা হল। ভুলের ব্যাখ্যায় বলা হল ইংরেজি থেকে বাংলায় তর্জমা করতে গিয়ে এই ভুল হয়ে থাকতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই তো প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষার মান কী হয়েছে, দেখুন।”


Post A Comment:
0 comments so far,add yours