রাতভর সেখানেই কাটানোর পর, আজ রবিবার সুকান্ত মজুমদার লকআপ থেকে বেরিয়ে বললেন, বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হলে, কেউ ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেবেন না।


'দেখব পুলিশের কত ক্ষমতা', লালবাজার থেকে বেরিয়ে জামিন প্রত্যাখান আন্দোলনের ঘোষণা সুকান্তর
সুকান্ত মজুমদার।


সারারাত বসেছিলেন লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপে। ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নিতে নারাজ সুকান্ত মজুমদার। কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদেই বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে শনিবার দুুপুরে গড়িয়াহাট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ একাধিক বিজেপি নেতাকে। তাদের আনা হয়েছিল লালবাজারে। রাতভর সেখানেই কাটানোর পর, আজ রবিবার সুকান্ত মজুমদার লকআপ থেকে বেরিয়ে বললেন, এবার বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হলে, কেউ ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেবেন না।


এ দিন লালবাজার থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, তমোঘ্ন ঘোষ সহ ৩২ জন নেতা মিলে জামিন প্রত্যাখান আন্দোলন শুরু করলাম। এরপরে পশ্চিমবঙ্গের যেখানেই বিজেপির কর্মকর্তারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হবেন, আমরা জামিন প্রত্যাখান করব। আমরা দেখতে চাই, পুলিশের বেশি ক্ষমতা নাকি বিজেপি কার্যকর্তাদের। পশ্চিমবঙ্গে কত জেল রয়েছে, আমরা দেখতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, গোটা রাত আমরা বসেছিলাম। পুলিশ প্রথমে বলে, সই করে জামিন নিন। আমরা অস্বীকার করায় কিছুক্ষণ পরে বলে, সই করতে হবে না, আপনারা এমনিই চলে যান। অর্থাৎ আমাদের আটকে রাখার কোনও তথ্য পুলিশের কাছে নেই। তাদের আইনি জায়গাই ছিল না। আমরা বলি যে কোর্টে পেশ করুন। পুলিশ সেই সাহস দেখায়নি। বলল, আমরা আপনাদের কোর্টে নিয়ে যেতে পারব না। আপনারা চলে যান। প্রশ্ন হল, তাহলে আমাদের ৪-৫ ঘণ্টা আটক করে বসিয়ে রাখা হল কেন? এর উত্তরও দিতে পারেনি পুলিশ। গোটা রাত আমরা বেঞ্চের উপরে বসে কাটিয়েছি। খাবার বাইরে থেকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। আহত কর্মীদের ওষুধের জন্যও অনেক লড়াই করতে হয়েছে। খাবারের ওষুধ পাননি তাও। ভিতর থেকে নিতে হয়েছে।

গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কসবার ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সন্দেশখালি থেকে শুরু করে কসবা, সব জায়গাতে মা-বোনেরা অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। আরজি করের ঘটনার ১০ মাসের ব্যবধানে ফের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই ঘটনা। গণধর্ষণের শিকার হলেন ছাত্রী। এরপরও একজন মুখ্যমন্ত্রী মুখ দেখাতে পারেন? বলতে পারেন যে এগিয়ে বাংলা? ওঁর লজ্জা করে না? মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও, তাঁর দলের পদ নিয়ে, তাঁর দলের নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে এভাবে শারীরিক শোষণ করবে, এটা রাজ্যের মানুষকে বলে দিতে হবে? এরা আগেও শারীরিক শোষণ করেছে। সেই সমস্ত মেয়েরা হয়তো লোকলজ্জায় সামনে আসতে পারেনি। কলেজে নির্বাচন হয় না। অভিযুক্ত ছাত্র বলছে পদ পেতে গেলে কম্প্রোমাইজ করতে হবে, তাঁর প্রতি লয়্যাল থাকতে হবে! কলেজের সম্পাদক পদের জন্য যদি এই ধরনের কম্প্রোমাইজ করতে হয়, তাহলে তৃণমূলের মূল দলে পদ পাওয়ার জন্য মহিলাদের কী ধরনের কম্প্রোমাইজ করতে হবে? এই প্রশ্নটাই তো সবার আগে উঠছে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours