ঝিমিয়ে পড়া, কার্যত বিলুপ্তির পথে থাকা টেস্ট ক্রিকেটকে যিনি জীবন্ত করে তুলেছিলেন, সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় মনে করলেন। এটিই তাঁর কাছে সঠিক সময় মনে হয়েছে। সিদ্ধান্তও কি সহজ? তা হয়তো নয়। তবে টেস্ট ক্রিকেটকে আবারও যেন সেই সাদা-কালো করেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত কিং কোহলির।
বিরাট জৌলুস হারাবে টেস্ট ক্রিকেট! অবসর ঘোষণা কিং কোহলির
কোনও অনুরোধ, ভাবনা, নিজের সঙ্গে লড়াই, কিছুই যেন কাজে এল না। গত কয়েক দিন ধরে তবু একটা আশার আলো ছিল। সরকারি ভাবে তো জানাননি! যদি সিদ্ধান্ত বদলান! যদি তাঁর থেকেও তারকা কোনও ক্রিকেটার, সতীর্থ বোঝাতে পারেন। একঝাঁক যদি…। কিন্তু এ দিন নিজেই ঘোষণা করে দিলেন বিরাট কোহলি। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা। ঝিমিয়ে পড়া, কার্যত বিলুপ্তির পথে থাকা টেস্ট ক্রিকেটকে যিনি জীবন্ত করে তুলেছিলেন, সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় মনে করলেন। এটিই তাঁর কাছে সঠিক সময় মনে হয়েছে। সিদ্ধান্তও কি সহজ? তা হয়তো নয়। তবে টেস্ট ক্রিকেটকে আবারও যেন সেই সাদা-কালো করেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত কিং কোহলির।
টেস্ট ক্রিকেট কি আদৌ টিকে থাকতে পারবে? যে প্রশ্নটা এখন ওয়ান ডে ফরম্যাটকে নিয়ে হচ্ছে, কয়েক বছর আগে টেস্ট ক্রিকেট নিয়েও উঠেছিল। সেই ঝিমিয়ে পড়া টেস্ট ক্রিকেটে এনার্জি ড্রিঙ্ক হয়ে এসেছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি সাদা জার্সিতে মাঠে নামলেও গ্য়ালারি আর আগের মতো খালি থাকছিল না। গ্যালারিতে কেউ ঝিমিয়ে পড়তেন না। সেটা দেশেই হোক বা বিদেশে। কারণ বিরাট মাঠে থাকা মানেই প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু হয়েই চলেছে। কোনও বোলার উইকেট নিলে, তাঁর চেয়ে বেশি বিরাটের সেলিব্রেশন দেখা যেত। যখন ব্যাটিং করছেন, বোলারদের কাছে সবচেয়ে দামি উইকেট ছিল বিরাট কোহলিরই।
গত কয়েক দিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অনুরোধমূলক পোস্ট দেখা যাচ্ছিল। ১০ হাজার টেস্ট রানে আর মাত্র ৭৭০ রান চাই। এমন সময় অবসর নিও না…। এমন অনেক পোস্ট। কিন্তু বিরাট যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন, সেটা বদলানো একমাত্র তাঁর পক্ষেই সম্ভব ছিল। কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাও অনুরোধ করেছিলেন বিরাট কোহলিকে। বলেছিলেন, টেস্ট ক্রিকেটের তোমাকে প্রয়োজন রয়েছে। বিরাট লাল-বলে আর খেলবেন না! মন খারাপ কিং কোহলির ভক্তদের। টেস্ট কেরিয়ার ১২৩টি ম্যাচ খেলেছেন বিরাট। করেছেন ৯২৩০ রান। রয়েছে ৩০ টি শতরান। ৩১টি অর্ধ শতরান। আর ২০১৬ সালে একঝাঁক ডাবল সেঞ্চুরিও তো রয়েছে এই ৩০ টি সেঞ্চুরির তালিকাতেই।
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে অবসর ঘোষণায় বিরাট কোহলি লিখেছেন, ‘সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না, কিন্তু সঠিক মনে হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ব্যাগি ব্লু পরার ১৪ বছর হয়ে গিয়েছে। সত্যি বলতে, এই ফরম্যাটটি আমাকে এতটা এগিয়ে নিয়ে যাবে তা কল্পনাও করিনি। এটি আমাকে পরীক্ষা করেছে, আমাকে গঠন করেছে এবং আমাকে এমন শিক্ষা দিয়েছে যা সারা জীবন আমার সঙ্গী হয়ে থাকবে। সাদা পোশাকে খেলার মধ্যে গভীরভাবে ব্যক্তিগত কিছু রয়েছে। শান্ত পরিবেশ, দীর্ঘ দিন, ছোট ছোট মুহূর্ত যা কেউ দেখে না কিন্তু তা চিরকাল আপনার সঙ্গে থাকে।’
Post A Comment:
0 comments so far,add yours